অথবা, নীলদর্পণ নাটকে সমকালীন বাংলার সমাজ ব্যবস্থার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা সংক্ষেপে লেখ। ভূমিকা: বাংলা তথা ভারতের জাতীয়তাবোধের বিকাশে যে সমস্ত সাহিত্য কীর্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তার মধ্যে দীনবন্ধু মিত্র রচিত নীলদর্পণ নাটকটি অন্যতম। এর বিষয়বস্তু ছিল নীল চাষীদের উপর নীলকর সাহেবদের নির্মম শোষণ, পীড়ন ও অত্যাচার। পটভূমি ও প্রকাশকাল: উনিশ শতকে বাংলার চাষীদের নীলচাষে বাধ্য করা হলে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ফলে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে অত্যাচারিত নীল চাষীরা নীলকরদের বিরুদ্ধে 'নীল বিদ্রোহ' শুরু করেন। এই আন্দোলনের পটভূমিকায় ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে দীনবন্ধু মিত্র ' কস্যচিৎ পথিকস্য ' ছদ্মনামে 'নীলদর্পণ' নাটকটি রচনা করেন। সামাজিক প্রতিফলন (গুরুত্ব) : এই নাটকে নদীয়ার গুয়াতলী মিত্র পরিবারের বিপর্যয়ের কাহিনীকে কেন্দ্র করে রচিত নাটকটিতে নীলকর উড সাহেব, প্রতিবাদী চরিত্র তোরাপ, কাজের মেয়ে আদুরি, সাদাসিধে ননীমাধব চরিত্রগুলির মাধ্যমে সমসাময়িক পরিস্থিতির জীবন্ত চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে। i] নীলকরদের শোষণ: এই নাটকে বাংলার নীলচাষীদের বলপূর...
সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো অথবা টীকা লেখা : সাঁওতাল বিদ্রোহ উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য, ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ আইন পাশ করেছিল, তা ভারতীয় উপজাতিদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। তাই শেষ পর্যন্ত ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয়, যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিল— ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার:- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে জমি তৈরি করে চাষবাস শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত : ব্রিটিশ সরকার ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয়। ফলে সাঁও...