সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

(২) দ্বিতীয় অধ্যায়। প্রশ্নের মান - ২ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নববিধান কী?

 নববিধান কী? নববিধান কী? কেশবচন্দ্র সেনের হিন্দু মতে নিজ কন্যার বিবাহ, রামকৃষ্ণ প্রীতি, খ্রিস্টপ্রীতি, চৈতন্য প্রীতি ইত্যাদি বিষয়ে মতানৈক্যের কারণে শিবনাথ শাস্ত্রী, আনন্দমোহন বসু, দ্বারকানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ তরুণ ব্রাহ্মরা ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ থেকে বেরিয়ে এসে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। এই পরিস্থিতিতে কেশবচন্দ্র সেন তার উদারপন্থী অনুগামীদের নিয়ে সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শে নববিধান ঘোষণা করেন। কেশবচন্দ্র সেন-এর নেতৃত্বে নববিধানকে আদর্শ করে গড়ে ওঠা সংগঠনটি নববিধান   নামে পরিচিত। --------------xx------------- এই বিষয়ে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর ঃ কে, কবে, কেন 'নববিধান সমাজ' প্রতিষ্ঠা করেন ? 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' কেন বিভক্ত হয় ? 'ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে'র ফল কী হয়েছিল ? ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে'র (সমাজ সংস্কার আন্দোলনের) ফলাফল কী হয়েছিল ?

পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রধান উদ্দেশ্য

 এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল? পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রধান উদ্দেশ্য পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে মিশনারিদের উদ্দেশ্য  ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল : খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটানো?  পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার ও নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানো।  বিভিন্ন প্রকার সামাজিক ও কুসংস্কার ও গোঁড়ামি দূর করা। ------------xx------------- এ বিষয়ে বিকল্প প্রশ্ন সমূহ : ১) খ্রিস্টান মিশনারীরা ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার চেয়েছিলেন কেন? ২) ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে খ্রিস্টান মিশনারিদের আগ্রহের কারণ কি ছিল? ৩) খ্রিস্টান মিশনারিরা কোন উদ্দেশ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছিলেন?

কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায় স্মরণীয়া কেন?

কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায় স্মরণীয়া কেন? কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায় স্মরণীয়া কেন? Why is Kadambini (Bose) Gangopadhyay memorable? ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নারী শিক্ষার প্রসার বিষয়ে আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন কৃতি নারীর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এমনই একজন কৃতি নারী হচ্ছেন কাদম্বিনী বসু গঙ্গোপাধ্যায়। এই সময়ের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুই মহিলা গ্র্যাজুয়েটের নাম হলো চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায়। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে এঁনারা বঙ্গদেশের প্রথম মহিলা স্নাতক ছিলেন। পরবর্তী জীবনে কাদম্বিনী দেবী প্রথম মহিলা চিকিৎসক রূপে পরিচিতি হন। -------------xx------------  বিকল্প প্রশ্ন : চন্দ্রমুখি বসু স্মরণীয় কেন? (  মনে রেখো : এই প্রশ্নের উত্তরে উপরের উল্লেখিত দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের শেষ লাইনটি বাদ দিতে হবে।)

মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২২ দুটি বা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও দুটি বা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: ৩.১) সামরিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী? সামরিক ইতিহাসে শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণ ও ফলাফলের মধ্যে যুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সীমাবন্ধ নেই — ১) যুদ্ধের খুটিনাটি বিষয়ও যে যুদ্ধকে প্রভাবিত ও ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করে তা সামরিক ইতিহাসে আলোচিত হয়েছে। ২) সামরিক ইতিহাস থেকে কোন রাষ্ট্র বা জাতি বা সংগঠনের যুদ্ধাস্ত্র, রণকৌশল, সামরিক পোশাক-পরিচ্ছদ প্রভৃতির বিবর্তন সহ বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত যুদ্ধের কারণ, পদ্ধতি, সমরসজ্জা, যুশ্বের আদর্শগত দিক প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়, যেগুলি যুদ্ধকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তাই আধুনিক সামাজিক ইতিহাসে সামরিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ। ৩২) 'সরকারি নথিপত্র' বলতে কী বোঝায়? 'সরকারি নথিপত্র' বলতে বোঝায় পুলিশসহ সরকারি আধিকারিকদের গোপন ও প্রকাশ্য লেখা চিঠিপিত্র, প্রতিবেদন, বিবরণ, সমীক্ষা, নোটিশ প্রভৃতি। এই সব নথিপত্র থেকে সরকারি মনোভাব, পদক্ষেপ, উদ্যোগ প্রভৃতি জানার পাশাপাশি ঐ নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। যেমন,

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২২

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২২ দুটি বা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও দুটি বা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: ৩.১) সামরিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী? সামরিক ইতিহাসে শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণ ও ফলাফলের মধ্যে যুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সীমাবন্ধ নেই — ১) যুদ্ধের খুটিনাটি বিষয়ও যে যুদ্ধকে প্রভাবিত ও ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করে তা সামরিক ইতিহাসে আলোচিত হয়েছে। ২) সামরিক ইতিহাস থেকে কোন রাষ্ট্র বা জাতি বা সংগঠনের যুদ্ধাস্ত্র, রণকৌশল, সামরিক পোশাক-পরিচ্ছদ প্রভৃতির বিবর্তন সহ বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত যুদ্ধের কারণ, পদ্ধতি, সমরসজ্জা, যুশ্বের আদর্শগত দিক প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়, যেগুলি যুদ্ধকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তাই আধুনিক সামাজিক ইতিহাসে সামরিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ। ৩২) 'সরকারি নথিপত্র' বলতে কী বোঝায়? 'সরকারি নথিপত্র' বলতে বোঝায় পুলিশসহ সরকারি আধিকারিকদের গোপন ও প্রকাশ্য লেখা চিঠিপিত্র, প্রতিবেদন, বিবরণ, সমীক্ষা, নোটিশ প্রভৃতি। এই সব নথিপত্র থেকে সরকারি মনোভাব, পদক্ষেপ, উদ্যোগ প্রভৃতি জানার পাশাপাশি ঐ নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। যেমন,

মধুসূদন গুপ্ত কে ছিলেন?

  মধুসূদন গুপ্ত কে ছিলেন? পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত (1800 - 15 নভেম্বর 1856) ছিলেন একজন বাঙালি ব্রাহ্মণ (বৈদ্য) অনুবাদক এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। তিনি পাশ্চাত্য চিকিৎসায়ও প্রশিক্ষিত ছিলেন এবং ১৮৩৬ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজে (সিএমসি) ভারতে প্রথম মানব ব্যবচ্ছেদ করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। সুশ্রুতের প্রায় 3,000 বছর পরে তিনিই পুনরায় শব ব্যবচ্ছেদে এগিয়ে আসেন। উনিশ শতকের বাংলায় তিনিই প্রথম বাঙালি শব ব্যবচ্ছেদকারী ডাক্তার যার হাত দিয়ে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে।  বিকল্প প্রশ্ন : মধুসূদন গুপ্ত স্মরণীয় কেন? বাংলা তথা ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে মধুসূদন গুপ্তের অবদান কী ছিল?

নব্য বেদান্ত-এর মূল কথা

নব্য বেদান্ত-এর মূল কথা কি? নব্য বেদান্ত : স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মীয় চিন্তাধারার গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো  ‘নব্য বেদান্তবাদ’। ‘নব্য বেদান্ত’-এর মূল কথা অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের বলা হয় যে, ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা। রম্য ও আত্মা পৃথক কিছু নয়। কিন্তু বিবেকানন্দ অদ্বৈত বেদান্তের নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেন, জগতের সর্বত্রই ব্রহ্মার উপস্থিতি রয়েছে। সাধারণ মানুষের সেবা করাই ব্রহ্মের সেবা করা। তাঁর অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের এই নতুন ব্যাখ্যাই ‘ নব্য বেদান্তবাদ’  নামে পরিচিত। তিনি প্রচার করেন ধর্মের তত্ত্ব কেবল মুখে আওড়ালে হবে না তাকে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। তাহারেই ব্যাখ্যা দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং ভারতবাসী সহ বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করে। ------------x------------ বিকল্প প্রশ্ন : ১) নব্য বেদান্ত কী? এর মূল কথা কী ছিল? ২) স্বামী বিবেকানন্দ ও নব্য বেদান্ত - টীকা লেখো। 

নারী সমাজের উন্নতির জন্য প্রকাশিত দুটি পত্রিকা

  নারী সমাজের উন্নতির জন্য প্রকাশিত দুটি পত্রিকার নাম লেখ। উনিশ শতকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত যে সমস্ত পত্রপত্রিকা নারী সমাজের উন্নতি কল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি পত্রিকার নাম হল : ১) হিন্দু পেট্রিয়ট (১৮৫৩) : শুভ বিবাহ নারী শিক্ষার সমর্থনে জনমত গঠনে ব্যাপক প্রচার চালায়। ২) বামাবোধিনী পত্রিকা (১৮৬৩) : নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানো, নারীর সচেতনতা বৃদ্ধি করা, তাদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়যোগ্য করে তোলা, এবং নারীদের মনের কথা তুলে ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ---------x----------

শ্রীরামকৃষ্ণ ও সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন

শ্রীরামকৃষ্ণ কীভাবে সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন করেছিলেন? উনিশ শতকে বাংলাদেশ খ্রিস্টান মিশনারী, ব্রাহ্মসমাজ ও ইয়ং বেঙ্গল দলের সদস্যদের ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন গুলির চাপে ভারতের সনাতন ধর্মের অগ্রগতি প্রায় রুদ্ধ হয়ে যায়। এই পটভূমিতে (পরিস্থিতিতে) শ্রীরামকৃষ্ণ সহজ সরল ভাষা ও উপমার সাহায্যে সনাতন ধর্মের এক নতুন ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করেন। এই মতাদর্শের মূল কথা হলো  সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন । তার মতে, ঈশ্বর এক। কিন্তু কেউ তাকে বলছে ঈশ্বর, কেউ রাম, কেউ আল্লাহ আবার কেউ ব্রম্মা। তাই ভিন্ন ভিন্ন পথে যেমন গন্তব্যে পৌঁছানো যায়, তেমনি ভিন্ন মত ও পথ অবলম্বন করেও ওই এক ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। একারণেই তিনি ঘোষণা করেন  যত মত ততো পথ -র কথা, এবং বলেন, যাগ-যজ্ঞ বা ধর্মীয় আড়ম্বরের মাধ্যমে নয়, কেবলমাত্র ভক্তির দ্বারাই ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব, তা যে পথ ধরেই যাওয়া হোকনা কেন। রামকৃষ্ণের এই সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রচারের ফলে বাংলায় জাতিভেদের কঠোরতা শিথিল হয় এবং  ধর্মীয় সমন্বয়ের আদর্শ শক্তিশালী হয়। ---------x------------- বিকল্প প্রশ্ন : শ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীরামকৃষ্ণ ও সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন, শ্রীরামকৃষ্ণ ও সর্ব

হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা থেকে কী ধরনের সমাজচিত্র পাওয়া যায় ?

হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় সমাজচিত্র যেসব সংবাদপত্র থেকে উনিশ শতকের বাংলাদেশের সমাজ জীবনের প্রতিফলন পাওয়া যায় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা। এই পত্রিকা থেকে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক শোষণ, কুসংস্কার, কৃষক বিদ্রোহ, নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ইত্যাদি বিষয়ে জানা যায়। ১) সেসময় সমাজে প্রচলিত কৌলীন্য প্রথা, বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে  হিন্দু প্যাট্রিয়ট  পত্রিকায় বিভিন্ন প্রবন্ধ লেখা হয়। এ ছাড়া নারীশিক্ষা ও বিধবাবিবাহের পক্ষেও প্রচার চালানো হয়। ২) দরিদ্র ভারতীয় কৃষকদের উপর করভার, শোষণ, কৃষকদের প্রতিবাদ, বিক্ষোভ-বিদ্রোহ, তাদের দারিদ্র্য প্রভৃতির কাহিনি  হিন্দু প্যাট্রিয়ট  পত্রিকা নিয়মিত তুলে ধরতো। আরও পড়ো : ( ৪ নম্বরের প্রশ্নের জন্য) হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা থেকে সমকালীন বাংলার কোন চিত্র ফুটে ওঠে ? বিভিন্ন বছরের প্রশ্ন পেতে  এখানে ক্লিক করো ।

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছিল কেন?

ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ হিন্দু কলেজের তরুন অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর  ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনে র ফলে বাংলাদেশের হিন্দু সমাজে গভীর আলোড়ন শুরু হয়। তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদী ও সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টি গড়ে ওঠে, যা তৎকালীন সমাজ ও ধর্ম ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলে। তবে, এই আন্দোলনের কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল : ১) তাদের নেতিবাচক চিন্তা ধারার বাড়বাড়ন্ত, ২) দেশের দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের কল্যাণে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা, ৩) তাদের দুর্বল সামাজিক ভিত্তি, ৪) শুধুমাত্র শহুরে উচ্চশিক্ষিত কিছুদিনের মধ্যে এই আন্দোলন সীমাবদ্ধ থাকা, ৫) মুসলিমদের সামাজিক সংস্কার বিষয়ে উদাসীন থাকা এবং ৬) ডিরোজিওর মৃত্যু পর তার অনুগামীদের নিষ্ক্রিয়তা। মূলত, এই সমস্ত সীমাবদ্ধতার কারণে ডিরোজিওর মৃত্যুর পরপরই এই আন্দোলন গতিহারায় এবং শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।

ডিরোজিয়ান কাদের বলা হয়?

  ২১) ডিরোজিয়ান কাদের বলা হয়? ডিরোজিও ছিলেন উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক। তৎকালীন রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস-সহ সমাজের একাধিক কু-প্রথার বিরুদ্ধে সংস্কার আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এই উদ্দেশ্যে তাঁর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা ‘ নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’  গড়ে তোলেন এবং  ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন’  শুরু করেন। হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও নব্য বঙ্গ গোষ্ঠীর সদস্যরা ' ডিরোজিয়ান'  নামে পরিচিত। তাদের এই আন্দোলনের ফলে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদী ও সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে, যা তৎকালীন ধর্ম ও সমাজ ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

ডিরোজিও স্মরণীয় কেন?

  ২০) ডিরোজিও স্মরণীয় কেন? ডিরোজিও ছিলেন উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক। তৎকালীন রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস-সহ সমাজের একাধিক কোন প্রথার বিরুদ্ধে সংস্কার আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করে তিনি বাংলার সংস্কার আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এই উদ্দেশ্যে তার নেতৃত্বে আর অনুগামীরা নব্য বঙ্গ গোষ্ঠী গড়ে তোলেন এবং নব্য বঙ্গ আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের ফলে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদী ও সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে, যা তৎকালীন ধর্ম ও সমাজ ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

কে, কবে, কী উদ্দেশ্যে 'ব্রাহ্মসভা' প্রতিষ্ঠা করেন?

 'ব্রাহ্মসভা' প্রতিষ্ঠার  উদ্দেশ্য  পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণার সংস্পর্শে এসে রাজা রামমোহন রায় হিন্দু ধর্মের প্রচলিত  মূর্তি পূজা  ও  আচার অনুষ্ঠানের সমালোচনা  করেন এবং  একেশ্বরবাদের প্রতি অনুরক্ত  হয়ে ওঠেন। ১৮২৮  সালে তিনি হিন্দু সমাজ ও ধর্মের প্রচলিত কুসংস্কার, অনুষ্ঠান সর্বস্বতা, লোকাচার এবং পুরোহিত তন্ত্রের মূঢ় আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য এবং যথার্থ হিন্দু সমাজ ও ধর্মপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে  ‘ব্রাহ্ম সভা’  নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এই সভায় বেদ, উপনিষদ পাঠ করার ব্যবস্থা হয়।

কে, কবে, কী উদ্দেশ্যে 'আত্মীয়সভা' প্রতিষ্ঠা করেন?

'আত্মীয়সভা' প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য  পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণার সংস্পর্শে এসে রাজা রামমোহন রায় হিন্দু ধর্মের প্রচলিত মূর্তি পূজা ও আচার অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেন এবং একেশ্বরবাদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে ওঠেন। এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং ধর্ম ও সমাজ সংস্কার বিষয়ে ভাব বিনিময়ের উদ্দেশ্য নিয়ে  ১৮১৫  সালে তিনি গড়ে তোলেন  ‘আত্মীয় সভা’।

উনিশ শতকে ভারতের সমাজসংস্কার আন্দোলনের দুটি সাফল্যের কথা উল্লেখ করো।

উনিশ শতকে ভারতের সমাজসংস্কার আন্দোলনের দুটি সাফল্য আঠারো শতকের শেষদিকেও  বাংলার ধর্মীয়  ও  সমাজ জীবনে  নানা কুসংস্কারের অস্তিত্ব ছিল। গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন, সতীদাহ প্রথা, অস্পৃশ্যতা প্রভৃতি। এই অবস্থার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে রাজা রামমোহন রায়, কেশবচন্দ্র সেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ডিরোজিও, শ্রীরামকৃষ্ণ প্রমুখের নেতৃত্বে সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের ফলে, বেশকিছু সাফল্য অর্জিত হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল : ১)  ১৮২৯  সালে  ১৭ নং রেগুলেশন আইন  পাস করে  সতীদাহপ্রথা  নিষিদ্ধ করা হয়। ২) কেশবচন্দ্র সেনের আন্দোলনের প্রভাবে  ১৮৭২  সালে  'তিন আইন'  পাস করে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ নিষিদ্ধ  হয় এবং  অসবর্ণ বিবাহ স্বীকৃতি  পায়। ৩) বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় ও সহযোগিতায়  ১৮৫৬  সালে  ‘বিধবাবিবাহ আইন’  আইন পাস করে  বিধবাবিবাহকে আইনসিদ্ধ  ঘোষণা করা হয়। উত্তর লেখার সময় যেকোন দুটি সাফল্যের কথা লিখতে হবে।

কে, কাকে, কেন 'আধুনিক ভারতের স্রষ্টা' বলে অভিহিত করেছেন?

আধুনিক ভারতের স্রষ্টা অথবা কে, কাকে, কেন 'ঐতিহ্যবাহি আধুনিকতাবাদী' বলে অভিহিত করেছেন? ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের আগে বাংলার সমাজ জীবন ছিল নানা ধরনের কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত। রাজা রামমোহন রায়-সহ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদি কিছু যুবক সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সমস্ত কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। মূলত উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত ' ব্রাহ্মসমাজ'  সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও গোঁড়ামি দূর করে একটি  আধুনিক যুক্তিবাদী  এবং  মানবতাবাদের  উপর ভিত্তি করে  সমন্বয়বাদী সমাজ  গঠনের উদ্দেশ্যে এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর এই উদ্যোগের জন্য রাজা রামমোহন রায়কে ঐতিহাসিক স্পিয়ার ' আধুনিক ভারতের স্রষ্টা'  এবং ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে ' ঐতিহ্যবাহী আধুনিকতাবাদী'  বলে অভিহিত করেছেন।

উনিশ শতকে ভারতের সমাজসংস্কার আন্দোলনের উদ্দেশ্য কী ছিল?

উনিশ শতকে ভারতের সমাজসংস্কার আন্দোলনের উদ্দেশ্য ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের আগে বাংলার সমাজ জীবন ছিল নানা ধরনের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত। রাজা রামমোহন রায়-সহ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদি কিছু যুবক সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সমস্ত কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। মূলত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত  'ব্রাহ্মসমাজ'  ও হিন্দু কলেজের তরুন অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর ' নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী'  সমাজ থেকে  অন্ধবিশ্বাস ,  কুসংস্কার  ও  গোঁড়ামি  দূর করে একটি  আধুনিক যুক্তিবাদী  এবং  মানবতাবাদের উপর ভিত্তি করে সমন্বয়বাদী সমাজ  গঠনের উদ্দেশ্যে এই এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।

'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' কেন বিভক্ত হয়?

ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেন ও তাঁর অনুগামীরা ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিস্কৃত হলে তাঁরা গড়ে তোলেন  'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' । কিন্তু কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে এই সংগঠনের তরুণ সদস্যদের মতবিরোধ শুরু হয়। ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ-এর নিয়ম ভেঙে কেশবচন্দ্র সেন নিজের ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যাকে কোচবিহারের মহারাজের সঙ্গে বিবাহ দিলে এই মতপার্থক্য চরম আকার নেয়। মূলত, এই কারণকে সামনে রেখেই ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ এর কয়েকজন তরুণ এই সংগঠন ত্যাগ করেন এবং ' সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ'  নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। ---------------xx-------------- এই বিষয়ে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর ঃ কে, কবে, কেন 'নববিধান সমাজ' প্রতিষ্ঠা করেন ? 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' কেন বিভক্ত হয় ? 'ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে'র ফল কী হয়েছিল ? ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে'র (সমাজ সংস্কার আন্দোলনের) ফলাফল কী হয়েছিল ?

'ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে'র ফল কী হয়েছিল?

ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে'র ফল কী হয়েছিল? অথবা,  ব্রাহ্মসমাজের দুটো সমাজসংস্কারমূলক কাজের উদাহরণ দাও। ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসাবের আগে বাংলার সমাজ জীবন ছিল নানা ধরণের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত। রাজা রামমোহন রায়-সহ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী কিছু যুবক  'ব্রাহ্মসমাজ'  প্রতিষ্ঠা করেন এবং সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এসমস্ত কুসংস্কার ও কুপথা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাদের এই আন্দোলন  'ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলন'  নামে পরিচিত।  তাঁদের উদ্যোগে --- ১) সমাজ থেকে  সতীদাহপ্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, দেবদাসীপ্রথা, জাতিভেদপ্রথা, অস্পৃশ্যতা, গঙ্গাজলে সন্তান বিসর্জন  ইত্যাদি কুপ্রথা দূর হয়। ২) রাজা রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন, অক্ষয় কুমার দত্ত, শিবনাথ শাস্ত্রী, আনন্দমোহন বসু প্রমুখের প্রচেষ্টায়  সর্বধর্মসমন্বয় সাধন ও মানবতাবাদ-এর প্রচার ও প্রসার  ঘটে। ৩) ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ-এর নেতা কেশবচন্দ্র সেনের আন্দোলনের প্রভাবে ১৮৭২ সালের সরকার  'তিন আইন'  পাস করে  বাল্যবিবাহ ,  বহুবিবাহ নিষিদ্ধ  করে এবং  অসবর্ণ বিবাহ

বহুল পঠিত প্রশ্ন-উত্তর এখানে

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

অথবা           টীকা লেখা:- সাঁওতাল বিদ্রোহ  উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল ।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য,  ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ করেছিল তার  প্রভাব ভারতীয় উপজাতিদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।  তাই শেষ পর্যন্ত 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।    সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিস্তীর্ণ  অঞ্চলের  শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর রেগে গিয়েছিল। যা হলো নিম্নরুপ:-  ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার :- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে  জমি তৈরি করে  চাষবাস শুরু করলে । ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে  এমন বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।    খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত :- ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয় । ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।  গ)   সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত :- 50 থেকে 500 হরে

কে, কবে, কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণ  লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’  প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, তারা মনে করতেন, ১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে  স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে  এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে। ২) এছাড়া ভারতীয়দের  ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে  তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। ৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা  আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব  আরোপ করেন এবং  ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে  এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন। মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।

খুৎকাঠি প্রথা কী?

খুঁৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানা চালু করলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। ফলে মুন্ডারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের এই প্রথা (ভূমি ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনে। অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম' কথার অর্থ কী? নীলকররা নীল চাষীদের উপর

নতুন সামাজিক ইতিহাস কী?

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ । অতীতে ইতিহাসে শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা কিংবা অভিজাতদের কথা লেখা থাকতো। বর্তমানে এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। এখন এখানে সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্তজদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবনের বিবর্তনের কথা ও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাসচর্চার এই ধারা  নতুন সামাজিক ইতিহাস  নামে পরিচিত।

নীল বিদ্রোহের কারণ কী? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখ।

নীল বিদ্রোহ : কারণ, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব : আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়। ফলে সেখানে বস্ত্র শিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা বাড়ে। ১৮৩৩ সালে সনদ আইন এর ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লুপ্ত হলে কোম্পানির কর্মচারিরা ব্যক্তিগতভাবে নীল চাষে নেমে পড়ে। অধিক মুনাফার আশায় এইসব কর্মচারীরা নীল চাষীদের উপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে। এই শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীল চাষিরা হাজার ১৮৫৯ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ নীল বিদ্রোহ নামে খ্যাত।  নীল বিদ্রোহের কারণ  (পটভূমি ) : নীল বিদ্রোহের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লক্ষ্য করা যায়। ১) কৃষকের ক্ষতি: নীল চাষের চাষের যে খরচ হতো মিল বিক্রি করে চাষির সে খরচ উঠতো না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ২) খাদ্যশস্যের অভাব:  নীল চাষ করতে গিয়ে কৃষকেরা খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রয়োজন মতো করতে পারত না। কারণ নীলকর সাহেবরা চাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতেন। ফলে চাষির ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ৩) নীলকরদের অত্যাচার :  চাষিরা নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে নীলকর সাহেবরা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনা করো:

১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি: ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে. এক পক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহী বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানা নাম অভিহিত করেছেন। ১) সিপাহী বিদ্রোহ:   ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস, এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহী বিদ্রোহ বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য - ক)১৮৫৭ সালের বিদ্রোফের চালিকাশক্তি ছিলেন সিপাহীরাই। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিফ্রহের সূচনা হয়েছিল। খ) এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ২) জাতীয় আন্দোলন: ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা

মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শন ও জীবনদর্শনের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকৃতি। তাঁর মতে, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হল, প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিক্ষার বিচ্ছিন্নতা। আর এজন্য আমাদের দেশের শিক্ষা শুধু অসম্পূর্ণই নয়, যান্ত্রিক এবং হৃদয়হীনও বটে। শিক্ষা ও তার লক্ষ্য : তাঁর মতে, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্ত:প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতির উপযোগী, দক্ষ ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হলো শিক্ষার লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণের উপায় : তাঁর মতে, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একজন শিশুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে তার দেহ মন সুসংগঠিত করতে হয়। এটা করলেই সে পরমসত্তাকে উপলব্ধি করতে পারে। লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ : শান্তিনিকেতনের ভাবনা : ১) শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা : এই কারণেই তিনি প্রাচীন তপবনের শিক্ষার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছিলেন। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রকৃতির স্নিগ্ধ ও সুশীতল পরিবেশে বসবাস করে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। ২) হিতৈষী তহবিল তৈরি : পল্লীগ্রামের মানুষের কল্যাণে এবং কৃষির উন্নতির জন্য গড়ে তোলেন হিতৈষী তহবি

শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ?

'শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ? লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে  ১৮৩৫  সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা  'মেকলে মিনিটস'  নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি   ' চুঁইয়ে পড়া নীতি'   নামে পরিচিত। 

তিন আইন কী?

 তিন আইন কী ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল ' তিন আইন'   পাস হওয়া।  ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং  ১৮৭২  সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ফলে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ  প্রথা নিষিদ্ধ এবং   অসবর্ণ বিবাহ  বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে ' তিন আইন'  নামে পরিচিত।