সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

(৩) তৃতীয় অধ্যায়। প্রশ্নের মান - ৪ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অরণ্য আইনের উদ্দেশ্যে

ঔপনিবেশিক সরকার কী উদ্দেশ্যে অরণ্য আইন প্রনয়ন করেছিল? অরণ্য আইনের উদ্দেশ্যে বনভূমি সংরক্ষণ, পরিবেশ সুরক্ষা, কৃষির প্রসার ইত্যাদির দোহাই দিয়ে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ও ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সরকার ভারতে পরপর দুটি অরণ্য আইন প্রনয়ন করলেও আসল উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্যিক মুনাফালাও ও সামরিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা। ১) বনজ সম্পদকে উপনিবেশিক স্বার্থে ব্যবহার : ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের মূল কারণ ছিল কাঠ ও বনজ সম্পদকে উপনিবেশিক স্বার্থে ব্যবহার করে মুনাফা অর্জন ও অন্যদিকে কৃষি জমির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে মুনাফা বৃদ্ধি। ২) রেলপথের সম্প্রসারণ : ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজ তৈরির জন্য উৎকৃষ্ট শাল ও সেগুন কাঠের প্রয়োজন ছিল অন্যদিকে রেলপথের সম্প্রসারণ, রেলের কামরা, শহরের বাড়িঘর, আসবাবপত্রের জন্য প্রচুর কাঠের দরকার ছিল। তাছাড়া বনজ সম্পদ হিসেবে মধু, লাক্ষা, ঔষধি গুন্ম, ভেষজ উদ্ভিদের বাণিজ্যিক চাহিদা ক্রমশ বাড়ছিল। ৩) কৃষি সম্প্রসারণ ও সশস্ত্র বিশৃঙ্খলা দমন : অপরিকল্পিত ভ্রাম্যমান ঝুম চাষের পরিবর্তে স্থায়ী ও সুসংগঠিত কৃষি সম্প্রসারণ এবং ভ্রাম্যমান সশস্ত্র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী আদিবাসীদের শান্ত স্থায়ী কৃষিজীবী ও পশুপালক

নীলবিদ্রোহে সংবাদপত্রের ভূমিকা

নীলবিদ্রোহে সংবাদপত্রের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর। নীলবিদ্রোহে সংবাদপত্রের ভূমিকা উঃ বাংলার নীলচাষিদের দূরবস্থা ও নীলকরদের অবর্ণনীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলার বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও বুদ্ধিজীবীমহল সরব হয়ে উঠেছিল। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা : সমকালীন প্রকশিত বিভিন্ন পত্র পত্রিকার মধ্যে সর্বপ্রথম ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে ' সমাচার চন্দ্রিকা ' ও ' সমাচার দর্পণে ' নীলকরদের অত্যাচারের কথা প্রকাশিত হয়। ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে অক্ষয়কুমার দত্ত 'তত্ত্ববোধিনী' পত্রিকায় নীলচাষ ও চাষিদের দুরবস্থা নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন বার করেন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের 'সংবাদ প্রভাকর' ও নীলবিদ্রোহীদের সমর্থনে খবর প্রকাশ করেন। ১) হিন্দু, প্যাট্রিয়ট ও হরিশচন্দ্র : নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছিল ' হিন্দু প্যাট্রিয়ট ' পত্রিকা। এই পত্রিকার বিভিন্ন সময়ের সম্পাদক গিরিশচন্দ্র ঘোষ, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ প্রমুখরা নীলচাষিদের সম্পর্কে নানাভাবে সাহায্য ও নীলকরদের অত্যাচারের কথা সংবাদ পত্রে প্রকাশ করেন। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় নিজে এবং সাংবাদিক নিয়োগ করে নীলচাষিদের দুর্দশার খবর

বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব' এর ধারণার ব্যাখ্যা

বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব' এর ধারণাটি ব্যাখ্যা করো। বিদ্রোহ , অভ্যুত্থান ও বিপ্লব তিনটি শব্দ আপাতভাবে একইরকম মনে হলেও ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে তিনটি শব্দের মধ্যে মূলগত পার্থক্য আছে।  বিদ্রোহ : যেমন বিদ্রোহের ভিত্তি হল প্রতিবাদ। প্রচলিত ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ ও বিরোধিতা করা। স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী, স্বশস্ত্র বা অস্ত্রছাড়া আন্দোলন। মূলত শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ। এটি একক বা সমষ্টিগত দুইভাবে সংঘটিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ নীল-বিদ্রোহ । তবে এর প্রকৃতি হল ধীরগতিতে পরিবর্তন ঘটে। অভ্যুত্থান : এর মূল চরিত্র হল সামরিক এবং প্রধান লক্ষ্যবস্তু হল কোন সরকার বা রাষ্ট্রব্যবস্থা। এটি আবশ্যিকভাবে সমষ্টিগত হবে। কখনো কখনো নিজ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি অংশের প্রতিবাদ হিসাবে আকস্মিকভাবে এটি ঘটে থাকে। যেমন- ১৯৪৬ খ্রিঃ ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নৌবিদ্রোহ 'কে অভ্যুত্থান হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। বিপ্লব:  বিপ্লব হল প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত, ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তন। এটি সশস্ত্র বা অস্ত্রহীন অথবা শান্তিপূর্ণও হতে পারে। এটির সামাজিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রভাব অনেক বেশি। বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ

বারাসাত বিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ

বারাসাত বিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। ইসলামের পুনরুজ্জীবন ও ইসলাম ধর্মের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হিসাবে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। ১) সাম্প্রদায়িক আন্দোলন : ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার , বিহারীলাল সরকার, কুমুদ রঞ্জন মল্লিক প্রমুখ একে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক আন্দোলন বলেছেন। ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত এই বিদ্রোহকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সংগঠিত আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন। ২) জমিদার বিরোধী : পুঁড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায়ের সঙ্গে তিতুমীরের বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। হিন্দু-মুসলিম উভয়শ্রেণীর মানুষ জমিদারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। তাই এটিকে জমিদার বিরোধী , হিন্দু-মুসলিমের ঐক্যের প্রতীক ও অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন বলে ঐতিহাসিক হান্টার , থর্নটন মন্তব্য করেন। ৩) কৃষক বিদ্রোহ : ঐতিহাসিক নরহরি কবিরাজ , ও কেয়ামুদ্দিন আহমেদ এই বিদ্রোহ কে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন বলে মনে করেন। নীলকর ও ব্রিটিশ বণিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল এটি। ডঃ বিনয়ভূষণ চৌধুরির মতে ওয়াহাবি আন্দোলন বা বারাসাত বিদ্রোহ ছিল কৃষক বিদ্রোহ । বারাসাত-বসিরহাট অঞ্চলে ব্রিটিশের শাসন লোপ পায় ও কৃষক শ্রেণীর মানুষ ক্ষমতা দখল করে স্বল্প সময়ের জন্য। ৪) ন

নীল বিদ্রোহ কী? এই বিদ্রোহ কেন হয়েছিলো?

নীল বিদ্রোহ কী? এই বিদ্রোহ হয়েছিলো? নীল বিদ্রোহ : ১৮৫৯-৬০ সালে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নীলচাষীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিল বাংলার ইতিহাসে  'নীল বিদ্রোহ'  নামে পরিচিত। নীলবিদ্রোহের কারণ : এই বিদ্রোহের পিছনে যে সমস্ত কারণ কার্যকরী ছিল তাদের মধ্যে নীল চাষীদের উপর অকথ্য অত্যাচার সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই অত্যাচারের মাধ্যমে তারা নীলচাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতো। এক্ষেত্রে ১) চাষীদের শারীরিক প্রহার, ২) তাদের গরু-বাছুর নীলকুঠিতে আটকে রাখা, ৩) ঘরে আগুন লাগানো, ৪) তাদের স্ত্রী-কন্যার সম্মানহানি এবং ৫) নীলকুঠিতে আটকে রাখার মত বিষয়গুলি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিল। ৬) এছাড়া এইসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে আইন-আদালতে প্রতিকারের উদ্দেশ্যে গেলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যেত না। এই সমস্ত কারণে নীল চাষীরা ক্রমশ সঙ্গবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহের পথে অগ্রসর হয়। --------------x------------- 📢  নীল বিদ্রোহ সংক্রান্ত আরও প্রশ্ন ও উত্তর পেতে নিচের লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করো।  ১)  নীল বিদ্রোহ বলতে কী বোঝ? এই বিদ্রোহের মূল কারণ কী ছিল? ২)  নিলকররা কীভাবে নীল চাষীদের ওপর অত্যাচার করত? ৩) 

চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব কী ছিল?

চুয়াড় বিদ্রোহ : আঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের চুয়াড় জনজাতির মানুষেরা ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ শুরু করে তা ‘চুয়াড় বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত।   চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব আঠারশ সালের জানুয়ারি মাসে গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি অনেক চেষ্টায় এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই বিদ্রোহের ফলে, ১) চুয়ার দের এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল যা পরবর্তীকালে ভারতের শিক্ষিত শিক্ষিত সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করেছিল প্রায় 100 বছর পরে। ২) জমিদার ও কৃষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিদ্রোহের শামিল হয়েছিল যা সচরাচর লক্ষ্য করা যায় না। ৩) তাদের এই আন্দোলনের ফলে বিষ্ণুপুর শহরকে কেন্দ্র করে দুর্গম বনাঞল কে নিয়ে জঙ্গলমহল নামে একটি বিশেষ জেলা গঠন করতে ব্রিটিশরা বাধ্য হয়। ৪) এবং পরবর্তীকালে ভূমি রাজস্ব নির্ধারণের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অধিকতর সাবধানতা অবলম্বন করতে বাধ্য হয়। ------------------------ বিকল্প প্রশ্ন : ১) চুয়াড় বিদ্রোহ কী? এই বিদ্রোহের ফলাফল সংক্ষেপে লেখ।  চুয়াড় বিদ্রোহ সম্পর্কে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প

বহুল পঠিত প্রশ্ন-উত্তর এখানে

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

অথবা           টীকা লেখা:- সাঁওতাল বিদ্রোহ  উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল ।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য,  ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ করেছিল তার  প্রভাব ভারতীয় উপজাতিদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।  তাই শেষ পর্যন্ত 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।    সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিস্তীর্ণ  অঞ্চলের  শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর রেগে গিয়েছিল। যা হলো নিম্নরুপ:-  ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার :- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে  জমি তৈরি করে  চাষবাস শুরু করলে । ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে  এমন বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।    খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত :- ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয় । ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।  গ)   সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত :- 50 থেকে 500 হরে

কে, কবে, কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণ  লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’  প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, তারা মনে করতেন, ১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে  স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে  এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে। ২) এছাড়া ভারতীয়দের  ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে  তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। ৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা  আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব  আরোপ করেন এবং  ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে  এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন। মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।

খুৎকাঠি প্রথা কী?

খুঁৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানা চালু করলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। ফলে মুন্ডারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের এই প্রথা (ভূমি ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনে। অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম' কথার অর্থ কী? নীলকররা নীল চাষীদের উপর

নতুন সামাজিক ইতিহাস কী?

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ । অতীতে ইতিহাসে শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা কিংবা অভিজাতদের কথা লেখা থাকতো। বর্তমানে এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। এখন এখানে সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্তজদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবনের বিবর্তনের কথা ও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাসচর্চার এই ধারা  নতুন সামাজিক ইতিহাস  নামে পরিচিত।

নীল বিদ্রোহের কারণ কী? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখ।

নীল বিদ্রোহ : কারণ, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব : আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়। ফলে সেখানে বস্ত্র শিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা বাড়ে। ১৮৩৩ সালে সনদ আইন এর ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লুপ্ত হলে কোম্পানির কর্মচারিরা ব্যক্তিগতভাবে নীল চাষে নেমে পড়ে। অধিক মুনাফার আশায় এইসব কর্মচারীরা নীল চাষীদের উপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে। এই শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীল চাষিরা হাজার ১৮৫৯ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ নীল বিদ্রোহ নামে খ্যাত।  নীল বিদ্রোহের কারণ  (পটভূমি ) : নীল বিদ্রোহের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লক্ষ্য করা যায়। ১) কৃষকের ক্ষতি: নীল চাষের চাষের যে খরচ হতো মিল বিক্রি করে চাষির সে খরচ উঠতো না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ২) খাদ্যশস্যের অভাব:  নীল চাষ করতে গিয়ে কৃষকেরা খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রয়োজন মতো করতে পারত না। কারণ নীলকর সাহেবরা চাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতেন। ফলে চাষির ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ৩) নীলকরদের অত্যাচার :  চাষিরা নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে নীলকর সাহেবরা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনা করো:

১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি: ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে. এক পক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহী বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানা নাম অভিহিত করেছেন। ১) সিপাহী বিদ্রোহ:   ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস, এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহী বিদ্রোহ বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য - ক)১৮৫৭ সালের বিদ্রোফের চালিকাশক্তি ছিলেন সিপাহীরাই। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিফ্রহের সূচনা হয়েছিল। খ) এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ২) জাতীয় আন্দোলন: ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা

মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শন ও জীবনদর্শনের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকৃতি। তাঁর মতে, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হল, প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিক্ষার বিচ্ছিন্নতা। আর এজন্য আমাদের দেশের শিক্ষা শুধু অসম্পূর্ণই নয়, যান্ত্রিক এবং হৃদয়হীনও বটে। শিক্ষা ও তার লক্ষ্য : তাঁর মতে, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্ত:প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতির উপযোগী, দক্ষ ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হলো শিক্ষার লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণের উপায় : তাঁর মতে, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একজন শিশুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে তার দেহ মন সুসংগঠিত করতে হয়। এটা করলেই সে পরমসত্তাকে উপলব্ধি করতে পারে। লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ : শান্তিনিকেতনের ভাবনা : ১) শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা : এই কারণেই তিনি প্রাচীন তপবনের শিক্ষার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছিলেন। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রকৃতির স্নিগ্ধ ও সুশীতল পরিবেশে বসবাস করে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। ২) হিতৈষী তহবিল তৈরি : পল্লীগ্রামের মানুষের কল্যাণে এবং কৃষির উন্নতির জন্য গড়ে তোলেন হিতৈষী তহবি

শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ?

'শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ? লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে  ১৮৩৫  সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা  'মেকলে মিনিটস'  নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি   ' চুঁইয়ে পড়া নীতি'   নামে পরিচিত। 

তিন আইন কী?

 তিন আইন কী ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল ' তিন আইন'   পাস হওয়া।  ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং  ১৮৭২  সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ফলে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ  প্রথা নিষিদ্ধ এবং   অসবর্ণ বিবাহ  বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে ' তিন আইন'  নামে পরিচিত।