অনন্দমঠ উপন্যাসে সন্তানদলের মূল লক্ষ্য আঠারো শতকের বাংলার ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ও সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের পটভূমিতে রচিত বঙ্কিমচন্দ্রের ' আনন্দমঠ' উপন্যাস ও সন্তানদলের উচ্চারিত 'বন্দেমাতরাম মন্ত্র' জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে গভীরভাবে উদ্দীপ্ত করেছিল। সন্তানদলের মূল লক্ষ্য : সাম্রাজ্যবাদী শাসনে বাংলার মানুষ যখন শোষিত, অর্থনৈতিক অবস্থা মুহ্যমান, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন যখন দিশাহীন তখন মুক্তির পথ দেখানোর চেষ্টা করেন এই উপন্যাসের সন্তানদল নামে একটি সন্ন্যাসী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর সদস্য ভবানন্দ, জীবানন্দ, সত্যানন্দ সকলেই দেশকে 'মা' বলে অভিহিত করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন ইংরেজদের অধীনে থেকে নিষ্কন্টক ধর্মাচরণ বা জ্ঞানলাভ নয়, পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনই তাদের মূল লক্ষ্য। গুরুত্ব : এই লক্ষ্য পূরণে সন্তানদলের সদস্য সত্যানন্দ এই গ্রন্থে দেশমাতৃকার অতীত ( মা যা ছিলেন ), বর্তমান ( মা যা হয়েছেন ) ও ভবিষ্যত ( মা যা হবেন ) এই তিনটি রূপ তুলে ধরে স্বৈরাচারী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে বিদ্রোহের আহ্বান জানান। তাঁর বক্তব্য - 'আমরা অন্য মা মানি না .... জন্মভূমিই জননী...
সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো অথবা টীকা লেখা : সাঁওতাল বিদ্রোহ উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য, ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ আইন পাশ করেছিল, তা ভারতীয় উপজাতিদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। তাই শেষ পর্যন্ত ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয়, যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিল— ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার:- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে জমি তৈরি করে চাষবাস শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত : ব্রিটিশ সরকার ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয়। ফলে সাঁও...