জাতীয় চেতনার প্রসারে আনন্দমঠ উপন্যাস : উনিশ শতকের ভারতীয়় জাতীয়তাবোধের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেছেছিলেন বিভিন্ন লেখক ও সাহিত্যিক। এ বিষয়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর 'আনন্দমঠ' উপন্যাসের অবদান অবিস্মরণীয়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'আনন্দমঠ'-এর অবদান : আঠারো শতকের বাংলার ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ও সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের পটভূমিতে রচিত বঙ্কিমচন্দ্রের ' আনন্দমঠ' উপন্যাসটি প্রগাঢ় প্রভাব ফেলেছিল জাতীয়তাবাদীদের ওপর : ১) আনন্দমঠ-এর সন্তানদলের উচ্চারিত 'বন্দেমাতরাম মন্ত্র' দেশবাসীকে মুক্তি আন্দোলনে যোগ দিতে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। যদু ভট্ট সুরারোপিত এই গান ক্রমে বিপ্লবীদের কাছে জাতীয় সংগীতে পরিণত হয়। ২) এই গ্রন্থে দেশমাতৃকার অতীত ( মা যা ছিলেন ), বর্তমান ( মা যা হয়েছেন ) ও ভবিষ্যত ( মা যা হবেন ) মূর্তিগুলি তুলে ধরে বঙ্কিমচন্দ্র স্বৈরাচারী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে বিদ্রোহের আহ্বান জানান। ৩) এই মূর্তির মাধ্যমে শোষণ মুক্তা, কল্যাণীয়া ও জগদ্ধাত্রী দেশমাতৃকার মূর্তিকে তুলে ধরে তিনি জাতিকে শুনিয়েছেন, 'দেশমাতা হলেন মা, দেশপ্রেম হল ...
সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো অথবা টীকা লেখা : সাঁওতাল বিদ্রোহ উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য, ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ আইন পাশ করেছিল, তা ভারতীয় উপজাতিদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। তাই শেষ পর্যন্ত ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয়, যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিল— ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার:- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে জমি তৈরি করে চাষবাস শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত : ব্রিটিশ সরকার ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয়। ফলে সাঁও...