সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো
অথবা
টীকা লেখা : সাঁওতাল বিদ্রোহ
উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য, ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ আইন পাশ করেছিল, তা ভারতীয় উপজাতিদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। তাই শেষ পর্যন্ত ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয়, যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ
বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিল—
ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার:- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে জমি তৈরি করে চাষবাস শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত : ব্রিটিশ সরকার ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয়। ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।
গ) সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত : ৫০ থেকে ৫০০ হারে ঋণ দিয়ে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা ও মহাজনরা সাঁওতালদের কাছে চড়া হারে সুদ আদায় করত। তাই তাদের সমস্ত কিছু বিক্রি করে দিলেও তাদের ঋণ শোধ হত না।
ঘ) সাঁওতালদের অত্যাচার : রেলপথ নির্মাণের কাজে ডালহৌসির কর্মচারীরা সাঁওতালদের জোর করে বেগার খাটাত। কেউ সম্মত না হলে তাকে শারীরিকভাবে অত্যাচার, ও বাড়ির জিনিসপত্র লুটপাট, এমনকি ঘরের রমণীদের পর্যন্ত সম্মানহানী করত।
ঙ) ব্রিটিশ সরকারের আইন প্রণয়ন : প্রথাগত আইন ও বিচার ব্যবস্থা বন্ধ করে সাঁওতালদের উপর জটিল ব্রিটিশ আইন প্রায়োগ করত।
চ) সাঁওতালদের খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহন : ইউরোপীয় মিশনারীরা বহু সাঁওতালকে জোর করে খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করত।
বিদ্রোহের বিস্তার
সিধু, কানু, চাঁদ, ভৈরব, কালু ,প্রমানিক, প্রমুখের নেতৃত্বে প্রায় ১০,০০০ সাঁওতাল ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ৩০ শে জুন ভগ্না ডিহির মাঠে একসঙ্গে জড়ো হয়ে স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করেন। স্থানীয় কামার, কুমোর, তাঁতী, পেশারত মানুষ ও এই বিদ্রোহে যোগদান করেন। তারা দিঘিখানার অত্যাচারী দারোগা মহেশ লাল দত্ত এবং মহাজন কেনারাম ভগৎকে হত্যা করেন।
সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল/গুরুত্ব/তাৎপর্য
১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের সংগঠিত সাঁওতাল বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত ব্যার্থ হলেও এর গুরুত্ব ও ফলাফল ছিল সূদুরপ্রসারী।
প্রথমত, সাঁওতালদের দাবি মেনে নিয়ে ইংরেজরা সাঁওতাল পরগনা গঠন করে দিতে বাধ্য হন।
দ্বিতীয়ত, সাঁওতালদের ক্ষোভের আগুন প্রতিটি খেটে খাওয়া মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
তৃতীয়ত, ব্রিটিশ সরকার শেষ পর্যন্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হয় যে, এই এলাকায় ব্রিটিশদের আইন কার্যকার হবে না।
চতুর্থত, সাঁওতাল এলাকায় কোনো বাঙালি ও বহিরাগত জমিদার ও মহাজনদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়।
পঞ্চমত, এই বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদের হার ধার্য করে দিতে বাধ্য হয়।
উপসংহার
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, অন্যান্য উপজাতি বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও সাঁওতাল বিদ্রোহের আগুন ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বেশ সফল হয়েছিল। তাই অধ্যাপক সুপ্রকাশ রায় এই বিদ্রোহকে ‘ভারতের যুগান্তকারী মহাবিদ্রোহের অগ্রদূত স্বরূপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
Sir Islam Dhormo na Kristan ??
উত্তরমুছুনOta
Very Interesting
উত্তরমুছুনVery good 👍 👏 👌 😀 ☺ 🙌 👍 👏 👌 😀 ☺ 🙌
উত্তরমুছুনDada oita Islam dhormo hobe na...oita Christian dhormo hobe
উত্তরমুছুনZhanks
উত্তরমুছুনOverall concept is clear.But some little bit mistake should you correction then this note is appropriate.
উত্তরমুছুন*DAMUN I KOHI
*DON'T PUBLISHED ISLAM RELIGION BY THE EUROPEAN MISSIONARIES ,BASICALLY THOSE WHO HAVE PUBLISHED CHRISTIANITY.
*REGION WAS MISTAKE.REGION IS BIRBHUM SAOTALPARGANA,MURSHIDABAD AND SO ON.
And over all much better.
ভুল নজরে আনার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে। লেখককে বিষয়টি অনুরোধ করছি।
উত্তরমুছুনলেখককে বিষয়টি সংশোধন করার অনুরোধ করছি।
মুছুন