সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

দশম শ্রেণি : সর্বশেষ প্রকাশিত প্রশ্নোত্তর

ছয় দফা দাবি ও তার গুরুত্ব

ছয় দফা দাবিগুলো কী কী? এর গুরুত্ব লেখো। ছয় দফা দাবি ও তার গুরুত্ব ছয় দফা দাবি কী : ছয় দফা হল নির্যাতিত, নিপীড়িত, শোষিত এবং ন্যায্য সুবিধাবঞ্চিত বাঙালী জাতিকে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নাগপাশ থেকে মুক্ত করার জন্য বাঙালিদের প্রাণের দাবি। কিছু নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে   জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ঐতিহাসিক ৬ দফা পেশ করেন ১৯৬৬ সালের ৭ জুন। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ৬ দফার মধ্যে আমাদের স্বাধীনতার বীজ নিহিত ছিল। ছয় দফা দাবি সমূহ : ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবিগুলো হল- প্রথম দফা : শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি:  ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের বৈশিষ্ট্য হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ও সংসদীয় পদ্ধতির; তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন হবে প্রত্যক্ষ এবং সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে। প্রদেশগুলোকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার প্রতিনিধি নির্বাচন জনসংখ্যার ভিত্তিতে হবে। দ্বিতীয় দফা : কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা:  কেন্দ্রীয় বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের দায়িত্ব থাকবে কেবল প্রতিরক্ষা ও ব
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

১৯৬৬ সালের ছয়-দফা আন্দোলনের পটভূমি ও গুরুত্ব

১৯৬৬ সালের ছয়-দফা আন্দোলনের পটভূমি ও গুরুত্ব সম্পর্কে লেখো ১৯৬৬ সালের ছয়-দফা আন্দোলনের পটভূমি ও গুরুত্ব ১৯৬৬ সালের ছয়-দফা আন্দোলনের পটভূমি ও গুরুত্ব ছয় দফা কর্মসূচি : তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক শোষণ, জাতিগত নিপীড়ন ও প্রশাসনিক বঞ্চনা পূর্ব পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীকে ক্রমান্বয়ে অসন্তুষ্ট করে তুলেছিল। এই পরিস্থিতে পূর্ব বাংলার জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যে কর্মসূচি ঘোষণা করেন তা ছয় দফা কর্মসূচি বা ছয় দফা দাবি  নামে পরিচিত। ছয়-দফা আন্দোলনের পটভূমি : ১. সামাজিক প্রেক্ষাপট : দেশ এক হলেও পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবধান ছিল বিস্তর। ফলে জন্ম নেয় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উঠে আসা বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বাঙালির মুক্তি লাভের ব্যাপারে অনুপ্রেরণা যোগায়। ২. রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালি জাতির প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন যুক্তফ্রন্ট নির্বাচিত হয় এবং ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি গোষ্ঠী য

বাংলার নবজাগরণ বলতে কী বোঝায়? এই নবজাগরণের সীমাবদ্ধতাগুলি কী?

বাংলার নবজাগরণ বলতে কী বোঝায়? এই নবজাগরণের সীমাবদ্ধতাগুলি কী? বাংলার নবজাগরণ বলতে কী বোঝায়? এই নবজাগরণের সীমাবদ্ধতাগুলি কী? What does the renaissance of Bengal mean? What are the limitations of this Renaissance? বাংলার নবজাগরণ কী : উনিশ শতকে পাশ্চাত্য সভ্যতার সংসর্গে আসার ফলে বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়, যার ভিত্তি ছিল আধুনিক যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদ। এই যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদ বাংলার শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ধর্ম, সমাজ -- সব কিছুকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ফলে বাংলার চিন্তন জগতে এক আলোড়ন তৈরি হয়। বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এটাই বাংলার নবজাগরণ নামে পরিচিত। নবজাগরণের সীমাবদ্ধতা : বাংলার নবজাগরণের ব্যপ্তি ছিল খুবই সীমিত : মূলত শহর কলকাতাকেন্দ্রিক : ঐতিহাসিক ব্লুমফিল্ড বলেছেন উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণে যাঁরা সামিল হয়েছেন তারা আসলে মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক, মূলত শহর কলকাতাকেন্দ্রিক। গ্রামবাংলার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক ছিল না।  এলিটিস্ট আন্দোলন : এটি ছিল মূলত পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত উচ্চবর্ণ ও উচ্চশিক্ষিত মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ঐতিহাসিক ডঃ অনিল শীল এদের

স্বাধীনতালাভের পর ভারতীয় রাজ্যগুলোকে ভাষার ভিত্তিতে পুনর্গঠনের জন্য প্রচেষ্টা

স্বাধীনতালাভের পর ভারতীয় রাজ্যগুলোকে ভাষার ভিত্তিতে পুনর্গঠনের জন্য কী কী প্রচেষ্টা হয়েছিল? ভারতীয় রাজ্যগুলোকে ভাষার ভিত্তিতে পুনর্গঠনে Efforts to reorganize Indian states on linguistic basis after independence স্বাধীনতা লাভ ও রাজ্য পুনর্গঠন-এর দাবি : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হন। এই সময়ের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল বিভিন্ন প্রদেশগুলো ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের দাবি জানায়।  ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন : এই পরিস্থিতিতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের যৌক্তিকতা বিচার করার জন্য সংবিধান সভা ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ' ভাযাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন' গঠন করে বিচারপতি এস.কে দার এর নেতৃত্বে। তাই একে ' দার কমিশন' বলা হয়। দার কমিশন ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের বিরোধিতা করেন এবং কমিশন মনে করে ভাষাভিত্তিক রাজ্য সংগঠিত হলে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে ও বিভিন্ন প্রকার প্রাদেশিক জটিলতা দেখা দেবে। ভাষাভিত্তিক রাজ্য পূর্ণগঠনের বিষয়টি মূলতুবি : এমতাবস্থায় তিন মন্ত্রী-কমিটি বা জে.ভি.পি কমিটি গঠিত হয় ১৯৪৮ খ্রিঃ। এ

কীভাবে কাশ্মীর সমস্যার সৃষ্টি হয়?

কীভাবে কাশ্মীর সমস্যার সৃষ্টি হয়? কীভাবে কাশ্মীর সমস্যার সৃষ্টি হয়? How did the Kashmir problem arise? কাশ্মীরের পরিচয় : পাঞ্জাবের শিখ মহারাজা রনজিৎ সিংহ দূরাণী বংশের (উপজাতীয়) পতন ঘটিয়ে ১৮২০ সালে কাশ্মীর দখল করেছিলেন। এরপর ইংরেজ-ইষ্টইন্ডিয়া কোম্পানি তা দখল করে এবং ১৮৪৬ খ্রিঃ জম্মুর হিন্দু রাজা গুলাব সিংহকে বিক্রি করেন। অতপর উত্তরাধিকার সূত্রে ১৯২৫-এ মহারাজা হন ইন্দোর মহিন্দর হরি সিং। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্বাধীন কাশ্মীর নামে স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের ওপর জোর দেন। হিন্দু রাজা হলেও প্রজারা ছিল সংখ্যাগুরু মুসলিম সম্প্রদায়। তারা ভারত বা পাকিস্তান কোনও রাষ্ট্রে যোগ না দিতে মনস্থ করেন। যদিও ন্যাশানাল কনফারেন্সের প্রধান শেখ আবদুল্লা ভারতবর্ষে যোগদানের পক্ষে মত দেন। পাকিস্তান সেনার অনুপ্রবেশ : এমতাবস্থায় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২২শে অক্টোবর পাক মদত পুষ্ট হানাদার বাহিনী ও পাক সেনাদল কাশ্মীরে প্রবেশ করে এবং লুন্ঠন ও হত্যালীলা চালায়। মহারাজা হরি সিং ১৯৪৭ সালের ২৪ অক্টোবর ভারতের সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করেন। মহারাজ হরিশিঙ্গের সাহায্য প্রার্থনা : মহারাজ হরি সিং ১৯৪৭ সালের ২৪ অক্টোবর ভারতের সামরিক সাহায্য

বাংলায় ছাপাখানার ব্যবসায়িক উদ্যোগ।

বাংলায় ছাপাখানার ব্যবসায়িক উদ্যোগ সমূহের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। — ২০২৩ বাংলায় ছাপাখানার ব্যবসায়িক উদ্যোগ। Give a brief account of the printing business ventures in Bengal ছাপাখানার ব্যবসায়িক উদ্যোগ : উনিশ শতকে বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারের ফলে ছাপাখানার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ছাপাকেন্দ্রিক এই ব্যবসারও প্রসার ঘটে। অচিরেই ছাপাকেন্দ্রিক কাজকর্ম একটি সমৃদ্ধ ব্যবসায় পরিণত হয়। ১) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের ভূমিকা : বাংলা তথা ভারতের একজন প্রকাশক, মুদ্রণ শিল্পবিদ, পুস্তক ব্যবসায়ী সাংবাদিকতার পথ প্রদর্শকরূপে বাঙালি গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের ভূমিকা বিশেষ স্মরণীয়। শ্রীরামপুর ব্যপটিস্টি প্রেসের কম্পোজিটর রূপে। জীবন শুরু করে পরবর্তীকালে কলকাতায় এসে 'ফরিস এন্ড কোম্পানি' প্রেসে যোগ দেন। সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ১৮১৮ খ্রিঃ হরচন্দ্র রায়ের সাথে যৌথভাবে চোরবাগান স্ট্রীটে বেঙ্গল গেজেটি' নামে একটি প্রেস স্থাপন করেন। তিনি ছিলেন প্রথম বাঙালি পুস্তক বিক্রেতা। তার হাত ধরেই মুদ্রণ, প্রকাশনা, পুস্তক ব্যবসা, ইত্যাদির বিশেষ অগ্রগতি ঘটে। 'সমাচার দর্পণ' পত্রিকায় এজন্য তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়।

বারদৌলি আন্দোলনের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। তুমি কী মনে কর যে, এই আন্দোলন ভূমিহীন কৃষকশ্রেণি এবং কৃষিশ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় সফল হয়েছিল?

বারদৌলি আন্দোলনের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। তুমি কী মনে কর যে, এই আন্দোলন ভূমিহীন কৃষকশ্রেণি এবং কৃষিশ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় সফল হয়েছিল? - ২০২৩ বারদৌলি আন্দোলনের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। তুমি কী মনে কর যে, এই আন্দোলন ভূমিহীন কৃষকশ্রেণি এবং কৃষিশ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় সফল হয়েছিল? Give a brief account of Bardauli Movement. বারদৌলি সত্যাগ্রহ অসহযোগ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনগুলি মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল গুজরাটের সুরাট জেলার বারদৌলি তালুকে কৃষকদের সত্যাগ্রহ আন্দোলন। বারদৌলি সত্যাগ্রহের কারণ : হালি প্রথা : বিভিন্ন কারণে এই আন্দোলনটি সংঘটিত হয়। এই অঞ্চলের ৬০% মানুষ ছিল নিম্নবর্ণের কালিপরাজ শ্রেণীভুক্ত। এরা ছিল ভূমিহীন ক্ষেতমজুর বা ভাগচাষি। এরা 'হালি প্রথা' অনুযায়ী উচ্চবর্ণের উজালি পরাজ জনগোষ্ঠীর দ্বারা শোষিত, নিপীড়িত ও অবজ্ঞার শিকার হত। বন্যাজনিত কারণ : ১৯২৫ সালে বারদৌলি তালুকে বন্যাজনিত কারণে ফসল নষ্ট হলে কৃষকদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে এবং দুর্ভিক্ষ হয়। কৃষকদের শোচনীয় অবস্থা সত্ত্বেও সরকার ১৯২৬ খ্রিঃ খাজনার হার প্রথমে ৩০% এবং পরে তা পরিবর্তন করে ২১.৯৭% করলে কৃষকরা প্রতিবাদে সোচ্

বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকা

বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকার মূল্যায়ন করো। বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকা Upendrakishore Roychowdhury's role in the development of printing press in Bengal উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিদেশ থেকে মুদ্রণযন্ত্র এনে শিবদাস লেনে কলকাতায় যে ছাপাখানা নির্মাণ করেন তা ইউ রায় এন্ড সন্স নামে পরিচিত। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে এই ছাপাখানা নির্মিত হয়। ১) তামা ও দস্তার অক্ষর উপেন্দ্রকিশোর কাঠের পরিবর্তে তামা ও দস্তার অক্ষর বা ছবি তৈরি করে মুদ্রণের জন্য ব্লক নির্মাণ করেন। তিনি বিজ্ঞানসম্মতভাবে আলোর ব্যবহার করে অন্ধকার ঘরে প্রতিফলন ও আলোর প্রতিসরণ ব্যবহার করে হাফটোন ব্লক উদ্ভাবন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ২) বিভিন্ন রং-এর ব্যবহার মূদ্রন শিল্পকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য বিভিন্ন রং-এর ব্যবহার করেন। কালার প্রিন্ট, ছবির ব্যবহার, ৬০০ স্ক্রিন, ডায়াফ্রাম পদ্ধতি স্ক্রিন অ্যাডজাস্টার যন্ত্র, ডায়োটাইপ, প্রভৃতি পদ্ধতিতে আধুনিক ছাপাখানার জন্ম দেন। রিপ্রিন্ট পদ্ধতি প্রভৃতি বই-এর প্রচ্ছদ তৈরিতে বিশেষভাবে আকর্ষনীয় হয়। ৩) আধুনিক ছাপাখানার কলাকৌশল তাঁর পুত্র সুকুমার রায়কে আধুনিক ছ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনার সমালোচনামূলক আলোচনা করো। - ২০২৩ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থার তীব্র সমালোচক ছিলেন। তিনি বিদেশী ভাষার মাধ্যমে শিক্ষার বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতে ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা ভারতীয়দের মধ্যে ভেদাভেদ ঘটাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষার হেরফের, তোতাকাহিনী, শিক্ষার বিকিরণ প্রভৃতি প্রবন্ধের কথা উল্লেখ করা যায়। তাঁর মতে, শিক্ষা হবে মানবজীবনের পূর্ণতাদানের চাবিকাঠি। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনার বৈশিষ্ট্য : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গুরুকুল শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল ছিলেন।  প্রকৃতি পাঠ কে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন।  মানব প্রকৃতির সাথে বিশ্বপ্রকৃতির মেলবন্ধন ঘটানো, প্রকৃতির কোলে বসে শিক্ষাগ্রহণের কথা বলেন।  চার দেওয়ালের পরিবর্তে খোলা আকাশের তলায় আলো, বাতাস, গাছপালার মধ্যে শিক্ষা গ্রহণের কথা বলেন।  ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'ব্রহ্ম বিদ্যালয়' সূচনা করেন। 'গোলদীঘির গোলামখানা' ছেড়ে আসার জন্য তিনি সরব হন।  পাশ্চাত্য বিজ্ঞান ও ভারতীয় সাহিত্যের মেলবন্ধন ঘটানোর উল্লেখ করার কথা বলেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে

লর্ড মেকলেকে কী এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তক বলা যায়?

লর্ড মেকলে-কে কী এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তক বলা যায়? লর্ড মেকলেকে কী এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তক বলা যায়? পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে অনিহা : ইংরেজ ইস্ট কোম্পানি এদেশে ক্ষমতা দখলের পর পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাদের ধারনা ছিল এদেশের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারিত হলে ভারতবাসীর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি পাবে ও তারা ক্রমশ ব্রিটিশ বিরোধী হয়ে উঠবে। ফলে তারা প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চাকেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ : ১) মিশনারীদের চেষ্টা : কোম্পানি উৎসাহী না হলেও খ্রিষ্টান মিশনারীরা এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেয়। তবে তাদের উদ্দেশ্য ছিল খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচার ও প্রসার।  ২) শিক্ষাখাতে ব্যয় বরাদ্ধ : সমকালীন শিক্ষার দীনতা উপলব্ধি করে ১৮১৩ খ্রিঃ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চাটার আইনের মাধ্যমে কোম্পানি সরকারকে বাৎসারিক ১ লক্ষ টাকা শিক্ষাখাতে ব্যয় করার নির্দেশ দেয়। তবে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের ফলে তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। ৩) জনশিক্ষা কমিটি তৈরি : জনশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৮২৩ খ্রিঃ জনশিক্ষা কমিটি তৈরি হয়। গভর্নর জেনারেল লর

অরণ্য আইনের উদ্দেশ্যে

ঔপনিবেশিক সরকার কী উদ্দেশ্যে অরণ্য আইন প্রনয়ন করেছিল? অরণ্য আইনের উদ্দেশ্যে বনভূমি সংরক্ষণ, পরিবেশ সুরক্ষা, কৃষির প্রসার ইত্যাদির দোহাই দিয়ে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ও ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সরকার ভারতে পরপর দুটি অরণ্য আইন প্রনয়ন করলেও আসল উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্যিক মুনাফালাও ও সামরিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা। ১) বনজ সম্পদকে উপনিবেশিক স্বার্থে ব্যবহার : ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের মূল কারণ ছিল কাঠ ও বনজ সম্পদকে উপনিবেশিক স্বার্থে ব্যবহার করে মুনাফা অর্জন ও অন্যদিকে কৃষি জমির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে মুনাফা বৃদ্ধি। ২) রেলপথের সম্প্রসারণ : ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজ তৈরির জন্য উৎকৃষ্ট শাল ও সেগুন কাঠের প্রয়োজন ছিল অন্যদিকে রেলপথের সম্প্রসারণ, রেলের কামরা, শহরের বাড়িঘর, আসবাবপত্রের জন্য প্রচুর কাঠের দরকার ছিল। তাছাড়া বনজ সম্পদ হিসেবে মধু, লাক্ষা, ঔষধি গুন্ম, ভেষজ উদ্ভিদের বাণিজ্যিক চাহিদা ক্রমশ বাড়ছিল। ৩) কৃষি সম্প্রসারণ ও সশস্ত্র বিশৃঙ্খলা দমন : অপরিকল্পিত ভ্রাম্যমান ঝুম চাষের পরিবর্তে স্থায়ী ও সুসংগঠিত কৃষি সম্প্রসারণ এবং ভ্রাম্যমান সশস্ত্র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী আদিবাসীদের শান্ত স্থায়ী কৃষিজীবী ও পশুপালক

নীলবিদ্রোহে সংবাদপত্রের ভূমিকা

নীলবিদ্রোহে সংবাদপত্রের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর। নীলবিদ্রোহে সংবাদপত্রের ভূমিকা উঃ বাংলার নীলচাষিদের দূরবস্থা ও নীলকরদের অবর্ণনীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলার বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও বুদ্ধিজীবীমহল সরব হয়ে উঠেছিল। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা : সমকালীন প্রকশিত বিভিন্ন পত্র পত্রিকার মধ্যে সর্বপ্রথম ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে ' সমাচার চন্দ্রিকা ' ও ' সমাচার দর্পণে ' নীলকরদের অত্যাচারের কথা প্রকাশিত হয়। ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে অক্ষয়কুমার দত্ত 'তত্ত্ববোধিনী' পত্রিকায় নীলচাষ ও চাষিদের দুরবস্থা নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন বার করেন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের 'সংবাদ প্রভাকর' ও নীলবিদ্রোহীদের সমর্থনে খবর প্রকাশ করেন। ১) হিন্দু, প্যাট্রিয়ট ও হরিশচন্দ্র : নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছিল ' হিন্দু প্যাট্রিয়ট ' পত্রিকা। এই পত্রিকার বিভিন্ন সময়ের সম্পাদক গিরিশচন্দ্র ঘোষ, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ প্রমুখরা নীলচাষিদের সম্পর্কে নানাভাবে সাহায্য ও নীলকরদের অত্যাচারের কথা সংবাদ পত্রে প্রকাশ করেন। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় নিজে এবং সাংবাদিক নিয়োগ করে নীলচাষিদের দুর্দশার খবর

ডারতের সংবিধান প্রস্তাবনা

ডারতের সংবিধান প্রস্তাবনা ডারতের সংবিধান প্রস্তাবনা আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতপ্ত রূপে গড়িয়া তুলিতে, এবং উহার সকল নাগরিক যাহাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তার, অভিব্যাক্তির, বিশ্বাসের, ধর্মের ও উপাসনার স্বাধীনতা; পদমর্যাদা ও সুযোগসুবিধা লাভ নিশ্চিতকরণ; এবং তাঁহাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-মর্যাদা ও জাতীয় ঐক্য ও সংহতির আশ্বাসক  ভ্রাতৃভাব বর্ধিত হয়; তজ্জন্য সত্যনিষ্ঠার সহিত সংকল্প করিয়া আমাদের সংবিধান সভায় অদ্য ২৯শে নভেম্বর, ১৯৪৯ তারিখে, এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করিতেছি, বিধিবদ্ধ করিতেছি এবং আমাদিগকে অর্পণ করিতেছি। THE CONSTITUTION OF INDIA PREAMBLE WE, THE PEOPLE OF INDIA, having solemnly resolved to constitute India into a SOVEREIGN SOCIALIST SECULAR DEMOCRATIC REPUBLIC and to secure to all its citizens JUSTICE, social, economic and political; LIBERTY of thought, expression, belief, faith and worship, EQUALITY of status and of opportunity, and to promote among them all FRATERNITY assuring the dignity of the

জাতীয়তাবাদ প্রসারে হিন্দুমেলার ভূমিকা

জাতীয়তাবাদ প্রসারে হিন্দুমেলার ভূমিকা বিশ্লেষণ করো। - ২০২২ জাতীয়তাবাদ প্রসারে হিন্দুমেলার ভূমিকা ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ভারতে সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতীয় চেতনার জাগরণে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে উঠেছিল তার বেশিরভাগই ছিল ভারতীয় সামাজিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে উপেক্ষা করে তৈরি। হিন্দু মেলার প্রতিষ্ঠা : এই প্রেক্ষাপটে রাজনারায়ন বসু উপলব্ধি করেন জাতীয় গৌরবগাথার উন্মেষ ছাড়া জাতির মহত্বলাভ সম্ভব নয়। রাজনারায়ন বসু র প্রেরণা ও ভাবধারায় নবগোপাল মিত্র ১৮৬৭ খ্রীঃ কলকাতায় হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য : হিন্দু মেলার দ্বিতীয় অধিবেশনেই সম্পাদক জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন- আমাদের এই মিলন সাধারণ ধর্ম-কর্মের জন্য নয়, কোনো বিশেষ সুখের জন্য নয়, কোনো আমোদ-প্রমোদের জন্য নয়। এটি স্বদেশের জন্য, ভারতের জন্য। হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল - সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দুধর্মের অতীত গৌরবের কথা ছড়িয়ে দেওয়া।  দেশীয় ভাষা চর্চা করা, জাতীয় প্রতীকগুলিকে মর্যাদা দেওয়া প্রভৃতি।  প্রাচীন হিন্দু ঐতিহ্য তুলে ধরে নবগোপাল মিয় এদেশে পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রসার প্

'গোরা' উপন্যাসটিতে রবীন্দ্রনাথের জাতীয়তাবাদী ভাবধারার পরিচয়

'গোরা' উপন্যাসটিতে রবীন্দ্রনাথের যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার পরিচয় পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ কর। ' গোরা' উপন্যাসটিতে রবীন্দ্রনাথের জাতীয়তাবাদী ভাবধারার পরিচয় ভূমিকা : স্বদেশী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয় জাতীয়তাবাদের শক্তি ও দুর্বলতা দুটিই প্রত্যক্ষ করেন এবং স্বদেশী আন্দোলনের ব্যর্থতা তাকে আত্মানুসন্ধানী করে তুলেছিল। তার পূর্ণপ্রকাশ ঘটেছিল'গোরা' উপন্যাসে। মানবতার বিরোধ ও সমন্বয় : ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯০৯ খ্রিস্টা পর্যন্ত 'প্রবাসী' পত্রিকায়'গোরা' উপন্যাসকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করার সময় রবীন্দ্রনাথ ব্যক্তির সঙ্গ্যে সমাজের, সমাজের সঙ্গে ধর্মের এবং ধর্মের সঙ্গে মানবতার বিরোধ ও সমন্বয়কে তুলে ধরেছেন। শুধুই কল্যাণের প্রতিমূর্তি : জীবনের শুরুর দিকে গোরা ছিল আপাদমস্তক হিন্দু। তার ভাবনা ছিল শুধুমাত্র হিন্দু ঐতিহ্যগত আদর্শ ও রীতিনীতির মাধ্যমে দেশ ও দেশের মানুষের উন্নতি ও মঙ্গাল একমাত্র সম্ভব। কিন্তু ঘটনাচক্রে গোরা যখন নিজের আত্মপরিচয় জানতে পারলেন অর্থাৎ তিনি ব্রাহ্মণ নন তার দেহে বইছে খ্রিষ্টান রক্ত (আইরিশ দম্পতির পূত্র), তখন তিনি তার পালিত মা আন

বহুল পঠিত প্রশ্ন-উত্তর এখানে

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

অথবা           টীকা লেখা:- সাঁওতাল বিদ্রোহ  উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল ।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য,  ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ করেছিল তার  প্রভাব ভারতীয় উপজাতিদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।  তাই শেষ পর্যন্ত 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।    সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিস্তীর্ণ  অঞ্চলের  শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর রেগে গিয়েছিল। যা হলো নিম্নরুপ:-  ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার :- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে  জমি তৈরি করে  চাষবাস শুরু করলে । ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে  এমন বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।    খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত :- ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয় । ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।  গ)   সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত :- 50 থেকে 500 হরে

কে, কবে, কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণ  লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’  প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, তারা মনে করতেন, ১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে  স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে  এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে। ২) এছাড়া ভারতীয়দের  ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে  তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। ৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা  আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব  আরোপ করেন এবং  ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে  এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন। মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।

নতুন সামাজিক ইতিহাস কী?

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ । অতীতে ইতিহাসে শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা কিংবা অভিজাতদের কথা লেখা থাকতো। বর্তমানে এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। এখন এখানে সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্তজদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবনের বিবর্তনের কথা ও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাসচর্চার এই ধারা  নতুন সামাজিক ইতিহাস  নামে পরিচিত।

খুৎকাঠি প্রথা কী?

খুঁৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানা চালু করলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। ফলে মুন্ডারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের এই প্রথা (ভূমি ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনে। অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম' কথার অর্থ কী? নীলকররা নীল চাষীদের উপর

নীল বিদ্রোহের কারণ কী? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখ।

নীল বিদ্রোহ : কারণ, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব : আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়। ফলে সেখানে বস্ত্র শিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা বাড়ে। ১৮৩৩ সালে সনদ আইন এর ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লুপ্ত হলে কোম্পানির কর্মচারিরা ব্যক্তিগতভাবে নীল চাষে নেমে পড়ে। অধিক মুনাফার আশায় এইসব কর্মচারীরা নীল চাষীদের উপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে। এই শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীল চাষিরা হাজার ১৮৫৯ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ নীল বিদ্রোহ নামে খ্যাত।  নীল বিদ্রোহের কারণ  (পটভূমি ) : নীল বিদ্রোহের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লক্ষ্য করা যায়। ১) কৃষকের ক্ষতি: নীল চাষের চাষের যে খরচ হতো মিল বিক্রি করে চাষির সে খরচ উঠতো না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ২) খাদ্যশস্যের অভাব:  নীল চাষ করতে গিয়ে কৃষকেরা খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রয়োজন মতো করতে পারত না। কারণ নীলকর সাহেবরা চাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতেন। ফলে চাষির ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ৩) নীলকরদের অত্যাচার :  চাষিরা নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে নীলকর সাহেবরা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনা করো:

১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি: ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে. এক পক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহী বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানা নাম অভিহিত করেছেন। ১) সিপাহী বিদ্রোহ:   ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস, এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহী বিদ্রোহ বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য - ক)১৮৫৭ সালের বিদ্রোফের চালিকাশক্তি ছিলেন সিপাহীরাই। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিফ্রহের সূচনা হয়েছিল। খ) এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ২) জাতীয় আন্দোলন: ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা

তিন আইন কী?

 তিন আইন কী ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল ' তিন আইন'   পাস হওয়া।  ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং  ১৮৭২  সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ফলে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ  প্রথা নিষিদ্ধ এবং   অসবর্ণ বিবাহ  বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে ' তিন আইন'  নামে পরিচিত। 

মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শন ও জীবনদর্শনের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকৃতি। তাঁর মতে, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হল, প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিক্ষার বিচ্ছিন্নতা। আর এজন্য আমাদের দেশের শিক্ষা শুধু অসম্পূর্ণই নয়, যান্ত্রিক এবং হৃদয়হীনও বটে। শিক্ষা ও তার লক্ষ্য : তাঁর মতে, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্ত:প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতির উপযোগী, দক্ষ ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হলো শিক্ষার লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণের উপায় : তাঁর মতে, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একজন শিশুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে তার দেহ মন সুসংগঠিত করতে হয়। এটা করলেই সে পরমসত্তাকে উপলব্ধি করতে পারে। লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ : শান্তিনিকেতনের ভাবনা : ১) শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা : এই কারণেই তিনি প্রাচীন তপবনের শিক্ষার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছিলেন। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রকৃতির স্নিগ্ধ ও সুশীতল পরিবেশে বসবাস করে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। ২) হিতৈষী তহবিল তৈরি : পল্লীগ্রামের মানুষের কল্যাণে এবং কৃষির উন্নতির জন্য গড়ে তোলেন হিতৈষী তহবি

শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ?

'শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ? লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে  ১৮৩৫  সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা  'মেকলে মিনিটস'  নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি   ' চুঁইয়ে পড়া নীতি'   নামে পরিচিত।