স্বাধীনতালাভের পর ভারতীয় রাজ্যগুলোকে ভাষার ভিত্তিতে পুনর্গঠনের জন্য কী কী প্রচেষ্টা হয়েছিল?
ভারতীয় রাজ্যগুলোকে ভাষার ভিত্তিতে পুনর্গঠনে |
Efforts to reorganize Indian states on linguistic basis after independence
স্বাধীনতা লাভ ও রাজ্য পুনর্গঠন-এর দাবি :
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হন। এই সময়ের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল বিভিন্ন প্রদেশগুলো ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের দাবি জানায়।ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন :
এই পরিস্থিতিতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের যৌক্তিকতা বিচার করার জন্য সংবিধান সভা ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে 'ভাযাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন' গঠন করে বিচারপতি এস.কে দার এর নেতৃত্বে। তাই একে 'দার কমিশন' বলা হয়। দার কমিশন ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের বিরোধিতা করেন এবং কমিশন মনে করে ভাষাভিত্তিক রাজ্য সংগঠিত হলে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে ও বিভিন্ন প্রকার প্রাদেশিক জটিলতা দেখা দেবে।
ভাষাভিত্তিক রাজ্য পূর্ণগঠনের বিষয়টি মূলতুবি :
এমতাবস্থায় তিন মন্ত্রী-কমিটি বা জে.ভি.পি কমিটি গঠিত হয় ১৯৪৮ খ্রিঃ। এই কমিটি কংগ্রেস কমিশন নামেও পরিচিত। জওহরলাল নেহেরু, বল্লভভাই প্যাটেল ও পটুভি সীতারামাইয়াকে নিয়ে কমিটি গঠিত হয়। পরিস্থিতি বিচার করে এই কমিটি ভাষাভিত্তিক রাজ্য পূর্ণগঠনের বিষয়টি মূলতুবি রাখে।পত্তি শ্রীরামালুর অনশন :
ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবী তুললে অন্ধ্র অঞ্চলে তামিল ও তেলেগু ভাষাভাষি মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পূর্বতন মাদ্রাজ প্রদেশকে ভেঙে তামিল ও তেলেগু অঞ্চলে ভাগ করার দাবী ওঠে। ইতিমধ্যে পত্তি শ্রীরামালু ৫৮ দিন অনশন করে পৃথক অস্ত্রের দাবি নিয়ে মারা যান ১৯৫৩ খ্রিঃ। অন্ধ্রপ্রদেশের জন্ম হয় ১৯৫৩ খ্রিঃ।রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের (১৯৫৬) রিপোর্ট পেশ :
রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন এর তিন সদস্য বিচারপতি ফজল আলি, কে.এম পানিক্কর ও হৃদয়নাথ কুঞ্জুর ১৯৫৬ সালে রিপোর্ট পেশ করে কেন্দ্র সরকারের নিকটে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, তাঁর সচিব ভি.পি. মেনন-এর প্রয়াসে জুনাগড়, হায়দ্রাবাদ, কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অংশে পরিণত হয় এবং রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের রিপোর্টে ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও ১৪টি রাজ্য পুনর্গঠিত হয়।
----------xx----------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন