বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ক্রমবিবর্তন ধারায় একটি উজ্জ্বল অধ্যায় বটতলার প্রকাশন ও সাহিত্য। কলকাতার শোভাবাজার-চিৎপুর এলাকার এক বিশাল বটগাছকে কেন্দ্র করে এই নামের উৎপত্তি হয়। উনিশ শতকের বাংলার মুদ্রণ ও প্রকাশনাশিল্প এখানেই শুরু হয়েছিল। এই বটগাছ এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মুদ্রণ ও প্রকাশনাশিল্প গড়ে উঠেছিল তা মূলত কম শিক্ষিত আর অত্যন্ত সাধারণ মানের পাঠকের চাহিদা মেটাতে।
বটতলার ভৌগোলিক অবস্থান সম্বন্ধে সুকুমার সেন তাঁর ‘বটতলার বই’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলেছেন— এগুলির চৌহদ্দি ছিল দক্ষিণে বিডন স্ট্রিট ও নিমতলা ঘাট স্ট্রিট, পশ্চিমে স্ট্র্যান্ড রোড, উত্তরে শ্যামবাজার স্ট্রিট এবং পূর্বে কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট”।
বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব বিশেষ উল্লেখযোগ্য। উনিশ শতকের কলকাতায় মূলত দর্জিপাড়া, শ্যামবাজার, জোড়াসাঁকো, শিয়ালদহ ইত্যাদি জায়গায় জনরুচি (Public Test) অনুযায়ী যেসব প্রকাশনা চলত তা ‘বটতলার প্রকাশনা’ নামে পরিচিত।
ব্রতকথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমসাময়িক ঘটনা রসালো কাহিনী সচিত্র গুপ্ত কথা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে লেখা বাংলা বই সস্তায় ছাপা হতো বটতলার প্রেসগুলিতে।
বটতলা অঞ্চলের যেসব দেশগুলি প্রকাশনা ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কবিতা রত্নাকর, কমলালয়, গ্রেট ইডেন ইত্যাদি।
পেপারের ব্যবহার এবং স্বদেশী কারিগরির মুন্সিয়ানা ইত্যাদির জন্য বটতলা প্রকাশনার বই এর দাম সস্তা হওয়ায় বিপুলভাবে এর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। উনিশ শতকে জন শিক্ষার বিস্তারে বটতলা প্রকাশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
Thank you so much💝💝
উত্তরমুছুন