সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ছাপাখানা বাংলায় শিক্ষা বিস্তারে কীরূপ পরিবর্তন এনেছিল?

ছাপাখানা বাংলায় শিক্ষা বিস্তারে কীরূপ পরিবর্তন এনেছিল? চলমান হরফের প্রচলন ও মুদ্রণ বিপ্লব সারাবিশ্বের জ্ঞানচর্চাকে উচ্চশ্রেণির সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র থেকে মুক্ত করে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রসারিত করেছিল। ভারত তথা বাংলার সামাজিক ও সংস্কৃতিক জাগরণ, সর্বোপরি গণশিক্ষার প্রসারে হাপাখানা ও ছাপাবই-এর ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বইপত্র সহজলভ্য হয় : রেভারেন্ড জেমস লক-এর মতে, মুদ্রণ ও শিক্ষার সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে মুদ্রিত পুস্তকের একটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পূর্বে শিক্ষাদান উচ্চবিত্তদের মধ্যে সীমাবন্ধ ছিল কিন্তু ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর প্রচুর ছাপাবই বাজারে আসে। ছাপা বইপত্রগুলির নাম সস্তা হওয়ায় সেগুলি আপামর মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়। শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপন : শ্রীরামপুর মিশনের মিশনারি উইলিয়াম কেরি ১৮০০ সালে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপন করলে এদেশের শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে যায়। এখান থেকে বাংলা, হিন্দি, অসমিয়া, গুড়িয়া, মারাঠি, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষার বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশিত এয়।  ধর্ম ও নীতি বিষয়ক শিক্ষার প্রসার : এছাড়া রামায়ণ ও মহাভারও সহ

বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব' এর ধারণার ব্যাখ্যা

বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব' এর ধারণাটি ব্যাখ্যা করো। বিদ্রোহ , অভ্যুত্থান ও বিপ্লব তিনটি শব্দ আপাতভাবে একইরকম মনে হলেও ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে তিনটি শব্দের মধ্যে মূলগত পার্থক্য আছে।  বিদ্রোহ : যেমন বিদ্রোহের ভিত্তি হল প্রতিবাদ। প্রচলিত ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ ও বিরোধিতা করা। স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী, স্বশস্ত্র বা অস্ত্রছাড়া আন্দোলন। মূলত শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ। এটি একক বা সমষ্টিগত দুইভাবে সংঘটিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ নীল-বিদ্রোহ । তবে এর প্রকৃতি হল ধীরগতিতে পরিবর্তন ঘটে। অভ্যুত্থান : এর মূল চরিত্র হল সামরিক এবং প্রধান লক্ষ্যবস্তু হল কোন সরকার বা রাষ্ট্রব্যবস্থা। এটি আবশ্যিকভাবে সমষ্টিগত হবে। কখনো কখনো নিজ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি অংশের প্রতিবাদ হিসাবে আকস্মিকভাবে এটি ঘটে থাকে। যেমন- ১৯৪৬ খ্রিঃ ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নৌবিদ্রোহ 'কে অভ্যুত্থান হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। বিপ্লব:  বিপ্লব হল প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত, ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তন। এটি সশস্ত্র বা অস্ত্রহীন অথবা শান্তিপূর্ণও হতে পারে। এটির সামাজিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রভাব অনেক বেশি। বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ

বারাসাত বিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ

বারাসাত বিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। ইসলামের পুনরুজ্জীবন ও ইসলাম ধর্মের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হিসাবে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। ১) সাম্প্রদায়িক আন্দোলন : ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার , বিহারীলাল সরকার, কুমুদ রঞ্জন মল্লিক প্রমুখ একে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক আন্দোলন বলেছেন। ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত এই বিদ্রোহকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সংগঠিত আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন। ২) জমিদার বিরোধী : পুঁড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায়ের সঙ্গে তিতুমীরের বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। হিন্দু-মুসলিম উভয়শ্রেণীর মানুষ জমিদারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। তাই এটিকে জমিদার বিরোধী , হিন্দু-মুসলিমের ঐক্যের প্রতীক ও অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন বলে ঐতিহাসিক হান্টার , থর্নটন মন্তব্য করেন। ৩) কৃষক বিদ্রোহ : ঐতিহাসিক নরহরি কবিরাজ , ও কেয়ামুদ্দিন আহমেদ এই বিদ্রোহ কে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন বলে মনে করেন। নীলকর ও ব্রিটিশ বণিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল এটি। ডঃ বিনয়ভূষণ চৌধুরির মতে ওয়াহাবি আন্দোলন বা বারাসাত বিদ্রোহ ছিল কৃষক বিদ্রোহ । বারাসাত-বসিরহাট অঞ্চলে ব্রিটিশের শাসন লোপ পায় ও কৃষক শ্রেণীর মানুষ ক্ষমতা দখল করে স্বল্প সময়ের জন্য। ৪) ন

বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রামমোহন রায়ের ভূমিকা

উনিশ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রামমোহন রায়ের ভূমিকার মূল্যায়ন করো। রাজা রামমোহন রায় পাশ্চাত্য শিক্ষার অনুরাগী ছিলেন। বিজ্ঞান, রাষ্ট্রনীতি, গণিত, অর্থনীতি, পাশ্চাত্য আইন বিভিন্ন বিষয়ে ভারতীয়দের সামিল করতে চেয়েছিলেন।  ১) ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে রামমোহন কলকাতায় অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠার সময়ে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি তাঁর নিজ একটি বাড়ি দান করতে প্রস্তুত ছিলেন। ২) ১৮১৩ খ্রিঃ সনদ আইনে সরকার যে বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে তা যাতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের জন্য ব্যয় করা হয়, সেই জন্য ১৮২৩ খ্রিঃ লর্ড আমহার্স্টকে তিনি পত্র লেখেন।  ৩) শিক্ষার্থীদের মন থেকে কুসংস্কার দূর করার লক্ষ্যে পাশ্চাত্য সমাজ বিজ্ঞান ও পদার্থবিদ্যা শিক্ষা দানের উদ্দেশ্যে ১৮২৬ খ্রিঃ বেদান্ত কলেজ স্থাপন করেন।  ৪) ১৮৩০ খ্রিঃ জেনারেল অ্যাসেমব্রিজ ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠায় ডাফকে এবং পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে ডেভিড হেয়ারকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন। ---------xx--------- 👉  সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলনে রামমোহন রায় ।

মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২২ দুটি বা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও দুটি বা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: ৩.১) সামরিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী? সামরিক ইতিহাসে শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণ ও ফলাফলের মধ্যে যুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সীমাবন্ধ নেই — ১) যুদ্ধের খুটিনাটি বিষয়ও যে যুদ্ধকে প্রভাবিত ও ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করে তা সামরিক ইতিহাসে আলোচিত হয়েছে। ২) সামরিক ইতিহাস থেকে কোন রাষ্ট্র বা জাতি বা সংগঠনের যুদ্ধাস্ত্র, রণকৌশল, সামরিক পোশাক-পরিচ্ছদ প্রভৃতির বিবর্তন সহ বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত যুদ্ধের কারণ, পদ্ধতি, সমরসজ্জা, যুশ্বের আদর্শগত দিক প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়, যেগুলি যুদ্ধকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তাই আধুনিক সামাজিক ইতিহাসে সামরিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ। ৩২) 'সরকারি নথিপত্র' বলতে কী বোঝায়? 'সরকারি নথিপত্র' বলতে বোঝায় পুলিশসহ সরকারি আধিকারিকদের গোপন ও প্রকাশ্য লেখা চিঠিপিত্র, প্রতিবেদন, বিবরণ, সমীক্ষা, নোটিশ প্রভৃতি। এই সব নথিপত্র থেকে সরকারি মনোভাব, পদক্ষেপ, উদ্যোগ প্রভৃতি জানার পাশাপাশি ঐ নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। যেমন,

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২২

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২২ দুটি বা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও দুটি বা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: ৩.১) সামরিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী? সামরিক ইতিহাসে শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণ ও ফলাফলের মধ্যে যুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সীমাবন্ধ নেই — ১) যুদ্ধের খুটিনাটি বিষয়ও যে যুদ্ধকে প্রভাবিত ও ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করে তা সামরিক ইতিহাসে আলোচিত হয়েছে। ২) সামরিক ইতিহাস থেকে কোন রাষ্ট্র বা জাতি বা সংগঠনের যুদ্ধাস্ত্র, রণকৌশল, সামরিক পোশাক-পরিচ্ছদ প্রভৃতির বিবর্তন সহ বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত যুদ্ধের কারণ, পদ্ধতি, সমরসজ্জা, যুশ্বের আদর্শগত দিক প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়, যেগুলি যুদ্ধকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তাই আধুনিক সামাজিক ইতিহাসে সামরিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ। ৩২) 'সরকারি নথিপত্র' বলতে কী বোঝায়? 'সরকারি নথিপত্র' বলতে বোঝায় পুলিশসহ সরকারি আধিকারিকদের গোপন ও প্রকাশ্য লেখা চিঠিপিত্র, প্রতিবেদন, বিবরণ, সমীক্ষা, নোটিশ প্রভৃতি। এই সব নথিপত্র থেকে সরকারি মনোভাব, পদক্ষেপ, উদ্যোগ প্রভৃতি জানার পাশাপাশি ঐ নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। যেমন,

ধর্মসংস্কার আন্দোলনরূপে ব্রাহ্মআন্দোলনের মূল্যায়ন

ধর্মসংস্কার আন্দোলনরূপে ব্রাহ্ম আন্দোলনের মূল্যায়ন করো। ভূমিকা ১৮২৮ খ্রিঃ একেশ্বরবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে, বহুদেববাদ, মূর্তিপূজা, পৌত্তলিকতা বিরোধী আন্দোলন গড়তে ' ব্রাহ্মসভা ' গঠন করা হয় ।  রামমোহন ও ধর্মসংস্কার রাজা রামমোহন রায় নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনার সমর্থনে (বেদ, ঈশ, কেন, কঠ, মন্ত্রক ও মাণ্ডুক্য) উপনিষদের বাংলা অনুবাদ ও বিশ্লেষণ করেন। সর্বধর্ম সমন্বয়, মানবতাবাদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মসভা পরবর্তীকালে ১৮৩০ খ্রিঃ 'ব্রাহ্মসমাজ' নামে পরিচিত হয়। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ধর্মসংস্কার তারপরে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মসমাজের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'তত্ত্ববোধিনী সভা' ধর্ম আলোচনায় বিশেষ ভূমিকা নেন, খ্রিস্টান পাদরী ও উগ্র পাশ্চাত্যপন্থীদের হাত থেকে হিন্দু সমাজকে রক্ষা করেন। ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের মাধ্যমে 'তিন আইন' পাস করায়, যার ফলে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হয়।  কেশবচন্দ্র সেন ও ধর্মসংস্কার কেশবচন্দ্র সেন তাঁর 'সুলভ সমাচার' পত্রিকার মাধ্যমে ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শ প্রচার করেন এবং বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, অসবর্ণ বিবাহ, সতীদাহ প্রথা

মাধ্যমিক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২৩

 মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষা — ২০২৩  ইতিহাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - ২০২৩ বিভাগ ‘গ’ ৩। দু'টি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে কোনো এগারোটি) :                                                   ২x১১ = ২২ ৩.১) ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ গুরুত্বপূর্ণ কেন? King George 12' ই ডিসেম্বর ১৯১১ A.D., ঘোষণা করেন রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লীতে স্থানান্তরের। এজন্য Royal Durbar দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়। মোহনবাগান হল প্রথম ভারতীয় দল হিসাবে বিদেশী দলের বিরুদ্ধে 1911 সালে ফুটবলে জয় ছিনিয়ে আনে। 1911 সালে বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করা হয়। ৩.২) 'সরকারি নথিপত্র' বলতে কী বোঝায়? পুলিশ বিভাগের রিপোর্ট ও সরকারী চিঠিপত্র, গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট, বিভিন্ন তথ্য, সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন ও চিঠিপত্র, এসবকেই সরকারি নথিপত্র বলা চলে। ৩.৩) কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায় স্মরণীয়া কেন? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুই মহিলা গ্র্যাজুয়েটের নাম হলো চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায়। 1883 খ্রিস্টাব্দে এঁনারা বঙ্গদেশের প্রথম মহিলা স্নাতক ছিলেন। পরবর্তী জীবনে কাদম্বিনী দেবী প্র

ম্যাপ পয়েন্টিং । সেট - ২

ম্যাপ পয়েন্টিং। সেট - ২ বাম দিকে প্রশ্ন। ডানদিকে ম্যাপে উত্তর দেখাচ্ছে। ৬ নং স্লাইডে সম্পূর্ণ উত্তর দেখাচ্ছে

বটতলা প্রকাশনা কী? এর গুরুত্ব লেখ।

বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ক্রমবিবর্তন ধারায় একটি উজ্জ্বল অধ্যায় বটতলার প্রকাশন ও সাহিত্য। কলকাতার শোভাবাজার-চিৎপুর এলাকার এক বিশাল বটগাছকে কেন্দ্র করে এই নামের উৎপত্তি হয়। উনিশ শতকের বাংলার মুদ্রণ ও প্রকাশনাশিল্প এখানেই শুরু হয়েছিল। এই বটগাছ এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মুদ্রণ ও প্রকাশনাশিল্প গড়ে উঠেছিল তা মূলত কম শিক্ষিত আর অত্যন্ত সাধারণ মানের পাঠকের চাহিদা মেটাতে।  বটতলার ভৌগোলিক অবস্থান সম্বন্ধে সুকুমার সেন তাঁর ‘বটতলার বই’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলেছেন—  এগুলির চৌহদ্দি ছিল দক্ষিণে বিডন স্ট্রিট ও নিমতলা ঘাট স্ট্রিট, পশ্চিমে স্ট্র্যান্ড রোড, উত্তরে শ্যামবাজার স্ট্রিট এবং পূর্বে কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট”। বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব বিশেষ উল্লেখযোগ্য।  উনিশ শতকের কলকাতায় মূলত দর্জিপাড়া, শ্যামবাজার, জোড়াসাঁকো, শিয়ালদহ ইত্যাদি জায়গায় জনরুচি (Public Test) অনুযায়ী যেসব প্রকাশনা চলত তা ‘ বটতলার প্রকাশনা’  নামে পরিচিত। ব্রতকথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমসাময়িক ঘটনা রসালো কাহিনী সচিত্র গুপ্ত কথা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে লেখা

বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে জেমস অগাষ্টস হিকির অবদান

 বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে জেমস অগাষ্টস হিকির অগাষ্টস হিকি : বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে আইরিশ শিল্প-উদ্যোগী জেমস অগাষ্টস হিকির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। দুই হাজার গচ্ছিত টাকা দিয়ে জেলে বসে ছাপাখানার টাইপ কিনে ছুতোর দিয়ে  ১৭৭৭ সালে কলকাতায়  প্রিন্টিং প্রেস বানিয়ে শুরু করেছিলেন ছাপাখানার ব্যবসা। প্রথম দিকে হ্যান্ডবিল,বিজ্ঞাপন,দলিল ইত্যাদি এবং পরে ব্রিটিশ সেনাদের জন্য আর্মি রেগুলেশন ছাপার কাজ পান তিনি। ফলে ছাপাখানার ব্যবসা দাড়িয়ে যায়। হিকির দেখাদেখি গভর্নর জেনারেল হেস্টিংসএর দুই বন্ধু ছাপাখানা খুললে অর্ডার হারান হিকি। বিকল্প আয়ের সন্ধানে শুরু করেন খবরের কাগজ ছাপার কাজ।  ফলে ১৭৮০ সালে  প্রকাশ পেল  ভারতের প্রথম সংবাদপত্র  ' হিকিস বেঙ্গল গেজেট' । ভারতের সংবাদ পত্রের  এবং  ব্রিটিশ স্বৈরশাসনের  তৎকালীন ইতিহাসের   গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে আছে  এই কাগজ । ---------------------- আরও পড়তে পারো : ১)  ভারতের ইতিহাসে জেমস অগাষ্টস হিকির অবদান এই বিষয়ে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন : হ্যালহেডের 'এ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ' গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? বাংলা ছাপাখানার বিকাশে চার্লস উইলকিনস-

ভারতের ইতিহাসে অগাষ্টস হিকি-এর অবদান কী ছিল?

অগাষ্টস হিকির অবদান কী ছিল? অগাষ্টস হিকি : বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে আইরিশ শিল্প-উদ্যোগী জেমস অগাষ্টস হিকির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি ১৭৭৭ সালে কলকাতায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এই ছাপাখানা থেকেই ১৭৮০ সালে ভারতের প্রথম সংবাদপত্র  ' হিকিস বেঙ্গল গেজেট' প্রকাশ করেন। হিকিজ বেঙ্গল গেজেটের কার্যক্রম / অবদান : হিকি এই পত্রিকাটির মাধ্যমে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসক ওয়ারেন হেস্টিংস-এর বিরুদ্ধে  ১) দুর্নীতি, ২) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে উৎকোচ দেওয়া, ৩) মানবাধিকার লংঘন, ৪) জনগণের সাথে আলোচনা না করে তাদের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া এবং  ৫) মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ আনেন।  হিকিজ বেঙ্গল গেজেটের গুরুত্ব : ১) অগাষ্টস হিকি  তার ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত পত্রিকার এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট তদন্ত করে ওয়ারেন হেস্টিংস ও প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচমেন্ট করে তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২) অগাষ্টস হিকি  বেঙ্গল গেজেটের মাধ্যমে  ব্রিটিশ কোম্পানীর শাসকদের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান। ৩) এমন কী কোম্পানীর শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় সৈনিকদের বিদ্রোহ কর

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কী?

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কী?  উপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি দূর করে বিকল্প হিসেবে স্বদেশের জন্য একটি জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে তা-ই জাতীয় শিক্ষা পরিষদ নামে পরিচিত। প্রসন্নকুমার ঠাকুর সর্বপ্রথম ‘ জাতীয় শিক্ষা’  কথাটি ব্যবহার করেন। এরপর স্বদেশী আন্দোলনের সময় ১৯০৬ সালে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে  ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’  বা  ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন’  গড়ে ওঠে। ------------x ---------- বিকল্প প্রশ্ন : ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন কী? কেন এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়? আরও পড়ো : ১)  জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য

বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব

বাংলার মুদ্রণ এ ইতিহাসে ‘বটতলা প্রকাশনা’র গুরুত্ব কি? বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব বিশেষ উল্লেখযোগ্য।  উনিশ শতকের কলকাতায় মূলত দর্জিপাড়া, শ্যামবাজার, জোড়াসাঁকো, শিয়ালদহ ইত্যাদি জায়গায় জনরুচি (Public Test) অনুযায়ী যেসব প্রকাশনা চলত তা ‘ বটতলার প্রকাশনা’  নামে পরিচিত। ব্রতকথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমসাময়িক ঘটনা রসালো কাহিনী সচিত্র গুপ্ত কথা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে লেখা বাংলা বই সস্তায় ছাপা হতো বটতলার প্রেসগুলিতে। বটতলা অঞ্চলের যেসব দেশগুলি প্রকাশনা ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কবিতা রত্নাকর, কমলালয়, গ্রেট ইডেন ইত্যাদি। পেপারের ব্যবহার এবং স্বদেশী কারিগরির মুন্সিয়ানা ইত্যাদির জন্য বটতলা প্রকাশনার বই এর দাম সস্তা হওয়ায় বিপুলভাবে এর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। উনিশ শতকে জন শিক্ষার বিস্তারে একতলা প্রকাশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ----------x-------- বিকল্প প্রশ্ন: বাংলার মুদ্রণ এ ইতিহাসে ‘বটতলা প্রকাশনা’র অবদান কি ছিল?

কেনারাম ও বেচারাম কাকে বলা হয়?

  কেনারাম ও বেচারাম কাকে বলা হয়? ‘কেনারাম’ ও ‘বেচারাম’ হল  দুই ধরনের ভুয়া বাটখারা । ওজনে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বহিরাগত ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের সঙ্গে কেনা-বেচার সময় এই বাটখারা ব্যবহার করত। বহিরাগত ব্যবসায়ীরা যখন সাঁওতালদের কাছে কৃষিপণ্য কিনতো, তখন বেশি ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। এই বাটখারা  কেনারাম  নামে পরিচিত ছিল। আবার ব্যবসায়ীরা যখন সাঁওতালদের কাছে লবণ চিনি প্রভৃতি ভোগ্য পণ্য বিক্রয় করত, তখন কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। এই ধরনের কম ওজনের বাটখারা কে বলা হত  বেচারাম । বিকল্প প্রশ্ন : ১) কেনারাম ও বেচারাম কী? ২) কেনারাম ও বেচারাম বলতে কী বোঝ?

বহুল পঠিত প্রশ্ন-উত্তর এখানে

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

অথবা           টীকা লেখা:- সাঁওতাল বিদ্রোহ  উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল ।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য,  ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ করেছিল তার  প্রভাব ভারতীয় উপজাতিদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।  তাই শেষ পর্যন্ত 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।    সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিস্তীর্ণ  অঞ্চলের  শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর রেগে গিয়েছিল। যা হলো নিম্নরুপ:-  ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার :- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে  জমি তৈরি করে  চাষবাস শুরু করলে । ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে  এমন বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।    খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত :- ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয় । ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।  গ)   সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত :- 50 থেকে 500 হরে

কে, কবে, কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণ  লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’  প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, তারা মনে করতেন, ১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে  স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে  এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে। ২) এছাড়া ভারতীয়দের  ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে  তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। ৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা  আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব  আরোপ করেন এবং  ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে  এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন। মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।

খুৎকাঠি প্রথা কী?

খুঁৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানা চালু করলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। ফলে মুন্ডারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের এই প্রথা (ভূমি ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনে। অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম' কথার অর্থ কী? নীলকররা নীল চাষীদের উপর

নতুন সামাজিক ইতিহাস কী?

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ । অতীতে ইতিহাসে শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা কিংবা অভিজাতদের কথা লেখা থাকতো। বর্তমানে এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। এখন এখানে সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্তজদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবনের বিবর্তনের কথা ও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাসচর্চার এই ধারা  নতুন সামাজিক ইতিহাস  নামে পরিচিত।

নীল বিদ্রোহের কারণ কী? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখ।

নীল বিদ্রোহ : কারণ, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব : আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়। ফলে সেখানে বস্ত্র শিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা বাড়ে। ১৮৩৩ সালে সনদ আইন এর ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লুপ্ত হলে কোম্পানির কর্মচারিরা ব্যক্তিগতভাবে নীল চাষে নেমে পড়ে। অধিক মুনাফার আশায় এইসব কর্মচারীরা নীল চাষীদের উপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে। এই শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীল চাষিরা হাজার ১৮৫৯ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ নীল বিদ্রোহ নামে খ্যাত।  নীল বিদ্রোহের কারণ  (পটভূমি ) : নীল বিদ্রোহের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লক্ষ্য করা যায়। ১) কৃষকের ক্ষতি: নীল চাষের চাষের যে খরচ হতো মিল বিক্রি করে চাষির সে খরচ উঠতো না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ২) খাদ্যশস্যের অভাব:  নীল চাষ করতে গিয়ে কৃষকেরা খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রয়োজন মতো করতে পারত না। কারণ নীলকর সাহেবরা চাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতেন। ফলে চাষির ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ৩) নীলকরদের অত্যাচার :  চাষিরা নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে নীলকর সাহেবরা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনা করো:

১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি: ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে. এক পক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহী বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানা নাম অভিহিত করেছেন। ১) সিপাহী বিদ্রোহ:   ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস, এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহী বিদ্রোহ বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য - ক)১৮৫৭ সালের বিদ্রোফের চালিকাশক্তি ছিলেন সিপাহীরাই। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিফ্রহের সূচনা হয়েছিল। খ) এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ২) জাতীয় আন্দোলন: ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা

মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শন ও জীবনদর্শনের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকৃতি। তাঁর মতে, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হল, প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিক্ষার বিচ্ছিন্নতা। আর এজন্য আমাদের দেশের শিক্ষা শুধু অসম্পূর্ণই নয়, যান্ত্রিক এবং হৃদয়হীনও বটে। শিক্ষা ও তার লক্ষ্য : তাঁর মতে, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্ত:প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতির উপযোগী, দক্ষ ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হলো শিক্ষার লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণের উপায় : তাঁর মতে, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একজন শিশুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে তার দেহ মন সুসংগঠিত করতে হয়। এটা করলেই সে পরমসত্তাকে উপলব্ধি করতে পারে। লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ : শান্তিনিকেতনের ভাবনা : ১) শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা : এই কারণেই তিনি প্রাচীন তপবনের শিক্ষার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছিলেন। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রকৃতির স্নিগ্ধ ও সুশীতল পরিবেশে বসবাস করে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। ২) হিতৈষী তহবিল তৈরি : পল্লীগ্রামের মানুষের কল্যাণে এবং কৃষির উন্নতির জন্য গড়ে তোলেন হিতৈষী তহবি

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ?

'শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ? লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে  ১৮৩৫  সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা  'মেকলে মিনিটস'  নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি   ' চুঁইয়ে পড়া নীতি'   নামে পরিচিত। 

তিন আইন কী?

 তিন আইন কী ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল ' তিন আইন'   পাস হওয়া।  ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং  ১৮৭২  সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ফলে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ  প্রথা নিষিদ্ধ এবং   অসবর্ণ বিবাহ  বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে ' তিন আইন'  নামে পরিচিত।