সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মাধ্যমিক - ২০২২-এর ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত (দুই তিন বাক্যে উত্তর) প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক - ২০২২-এর ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত (দুই তিন বাক্যে উত্তর) প্রশ্নোত্তর 

মাধ্যমিক ইতিহাস - ২০২২-এর সম্ভাব্য সংক্ষিপ্ত (দুই তিন বাক্যে উত্তর) প্রশ্নোত্তর 

দুই-তিনটি বাক্যে উত্তর দাও।

১) স্থানীয় ইতিহাস চর্চা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

কোন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনসমাজের নিজস্ব ইতিহাসকে সাধারণভাবে স্থানীয় ইতিহাস বলা হয়। কলহনের লেখা কাশ্মীর রাজ্যের ইতিহাস ‘রাজ তরঙ্গিনী’এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এই ধরনের ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব হলো -
১) এর দ্বারা স্থানীয় অঞ্চলের আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
২) জাতীয় ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে থেকে যাওয়া ফাঁকফোকর পূরণ করতে এই ধরনের ইতিহাস সাহায্য করে।
৩)  স্থানীয় মানুষ নিজেদের অঞ্চলের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রাচীনত্ব জেনে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে।
৪) এবং এর থেকে তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী মানসিকতায় সৃষ্টি হয়।

২) সামাজিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কি?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৩) আধুনিক ইতিহাস চর্চার প্রধান বৈশিষ্ট্য কি?

আধুনিক ইতিহাস চর্চার বিষয় ও উপাদানগত বৈচিত্রের মধ্যে রয়েছে এর প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি।
১) আধুনিক ইতিহাস শুধু রাজকাহিনী নয়, তা হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষেরও ইতিহাস।
২) শুধুমাত্র যুদ্ধ-বিগ্রহ বা রাজ্যশাসন নয়, সমস্ত মানুষের জীবনধারণের প্রতিটি ক্ষেত্র (আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক) হয়েছে এর বিষয়বস্তু।
৩) আধুনিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে উঠে এসেছে নতুন নতুন সূত্র। পুরনো উপাদানগুলির সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে ইচ্ছাপত্র, আত্মকথা, চিঠিপত্র, সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র, চিত্রকলা, ফটোগ্রাফি, ইন্টারনেট ইত্যাদি।

বিকল্প প্রশ্ন :
আধুনিক ইতিহাস চর্চার বৈচিত্র কী?

৪) সামরিক ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?

মানব সভ্যতার ইতিহাসে রাজনৈতিক জীবনের গুরুত্ব অপরিসীম। যুগ যুগ ধরে রাজনৈতিক জীবনে যুদ্ধ এবং যুদ্ধের পদ্ধতিগত বিবর্তন গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। যুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরিচালনার পদ্ধতিগত বিবর্তনের বিবরণী হল সামরিক ইতিহাস।
যদুনাথ সরকারের ‘মিলিটারি হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া’, সুবোধ ঘোষের ‘ভারতীয় ফৌজের ইতিহাস’ সামরিক ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

৫) হিন্দুমেল কেন ব্যর্থ হয়েছিল? অথবা হিন্দু মেলার সীমাবদ্ধতা কি ছিল?

বাংলা তথা ভারতের জাতীয় চেতনার কোন মাসে হিন্দু মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে হিন্দু মেলা বেশিদিন জনপ্রিয়তা রক্ষা করতে পারেনি। কারণ,
১) নবগোপাল মিত্র হিন্দু জাগরণের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা নতুন প্রজন্মের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সমর্থন করেনি।
২) রাজনৈতিক কর্মকান্ডে গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র দেশাত্মবোধ প্রচারের উদ্যোগ সাধারণ মানুষের কাছে গুরুত্বহীন বলে মনে হয়েছিল।

এই সমস্ত সীমাবদ্ধতার কারণে হিন্দুমেলা ব্যর্থ হলেও ১৯০৫ সালে স্বদেশী আন্দোলনের সময় যে তীব্র দেশাত্মবোধ লক্ষ্য করা যায়, তা হিন্দুমেলার পরোক্ষ প্রভাব বলেই ঐতিহাসিকরা মনে করেন।

৬) শ্রীরামকৃষ্ণ কীভাবে সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন করেছিলেন?

উনিশ শতকে বাংলাদেশ খ্রিস্টান মিশনারী, ব্রাহ্মসমাজ ও ইয়ং বেঙ্গল দলের সদস্যদের ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন গুলির চাপে ভারতের সনাতন ধর্মের অগ্রগতি প্রায় রুদ্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে শ্রীরামকৃষ্ণ সহজ সরল ভাষা ও উপমার সাহায্যে সনাতন ধর্মের এক নতুন ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করেন। এই মতাদর্শের মূল কথা হলো সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন

তার মতে, ঈশ্বর এক। কিন্তু কেউ তাকে বলছে ঈশ্বর, কেউ রাম, কেউ আল্লাহ আবার কেউ ব্রম্মা। তাই ভিন্ন ভিন্ন পথে যেমন গন্তব্যে পৌঁছানো যায়, তেমনি ভিন্ন মত ও পথ অবলম্বন করেও ওই এক ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। একারণেই তিনি ঘোষণা করেন যত মত ততো পথ-র কথা, এবং বলেন, যাগ-যজ্ঞ বা ধর্মীয় আড়ম্বরের মাধ্যমে নয়, কেবলমাত্র ভক্তির দ্বারাই ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব, তা যে পথ ধরেই যাওয়া হোকনা কেন।

রামকৃষ্ণের এই সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রচারের ফলে বাংলায় জাতিভেদের কঠোরতা শিথিল হয় এবং  ধর্মীয় সমন্বয়ের আদর্শ শক্তিশালী হয়।

৭) সরকারি নথিপত্র আধুনিক ইতিহাস চর্চায় কতটা মূল্যবান?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৮) আত্মজীবনী কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৯) সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রের মধ্যে পার্থক্য কি?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

১০) বঙ্গদর্শন পত্রিকা থেকে কি কি বিষয় জানা যায়?

১৮৭২ সালে প্রকাশিত ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বঙ্গদর্শন জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ও বলিষ্ঠ জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

এই পত্রিকায় প্রকাশিত রচনাবলী থেকে উনিশ শতকের বাংলায় ইংরেজ সরকার ও জমিদারদের শোষণ-অত্যাচার, সামাজিক পরিস্থিতি, সাধারণ মানুষের অবস্থা, সাহিত্য, রাজনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মতত্ত্ব প্রভৃতি সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়।
এক কথায়, ১৮৭২ থেকে ১৮৮৩ সাল পর্যন্ত সময়ের বাঙালি মনীষার চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত হতে চাইলে বঙ্গদর্শনের শরণাপন্ন হতেই হয়।

১১) সোমপ্রকাশ পত্রিকার বিষয়বস্তু কি ছিল?

সোমপ্রকাশ ছিল বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম রাজনৈতিক পত্রিকা। এই পত্রিকা থেকে তৎকালীন সময়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
১) বাংলাদেশের কৃষকদের উপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচার
২) সমকালীন সময় বিধবা বিবাহ প্রচলন, স্ত্রী শিক্ষার প্রসার ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষিত বাঙালির চিন্তাভাবনা,
৩) ধর্ম ব্যবস্থার ত্রুটি, ইংরেজ শাসনের কুফল ও তাদের দমন-পীড়ন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মনোভাব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়।

১২) ব্রিটিশ সরকার কেন সোমপ্রকাশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল?

সোমপ্রকাশ ছিল বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম রাজনৈতিক পত্রিকা। এই পত্রিকা ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের পক্ষে প্রচার চালালেও এর রাজনৈতিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই সঙ্গে এই পত্রিকা :
১) কৃষকদের উপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচার,
২) ইংরেজ শাসনের কুফল,
৩) দেশ শাসনের নামে দেশবাসীর উপর দমন-পীড়ন ইত্যাদি বিষয়ে দেশবাসীকে সচেতন করতে সচেষ্ট হয়।

মূলত এই কারণেই, ক্রমাগত ব্রিটিশবিরোধী লেখা প্রকাশের দায়ে লর্ড লিটনের ‘দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন’-এর অপপ্রয়োগ করে এই পত্রিকাটি ব্রিটিশ সরকার বন্ধ করে দেয়।

১৩) হিকির বেঙ্গল গেজেট সংবাদপত্রটির গুরুত্ব কী ছিল?

ভারতের প্রথম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র হলো হিকির ‘বেঙ্গল গেজেট’ বা ‘হিকি’স গেজেট’।

এই পত্রিকাটি থেকে সমকালীন ব্রিটিশ ভারতের সমাজ সংস্কৃতি অর্থনীতি ব্রিটিশদের অত্যাচার শাসন নীতি ভারতীয়দের প্রতিরোধ ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

১৪) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার উদ্দেশ্য কি ছিল?

রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যুর পর তার অনুগামীদের উদ্যোগে ১৮৩৬ সালে কলকাতায় বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা গড়ে ওঠে। যোগেশচন্দ্র বাগল-এর মতে, এটিই ছিল বাঙালি তথা ভারতীয়দের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান

এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল
১) জনগণের মঙ্গলার্থে সরকারি শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা করা এবং
২) এই ত্রুটি দূর করার জন্য সরকারকে আবেদন জানানো।

১৫) জমিদার সভার দুটি সীমাবদ্ধতা লেখ।

ভারতের প্রথম উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সংগঠনের নাম হল জমিদার সভা বা ল্যান্ড হোল্ডার সোসাইটি।

জমিদার সভার ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভারতের মাটির সঙ্গে শর্তযুক্ত সকল মানুষই এই প্রতিষ্ঠান সদস্য হতে পারে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহক সমিতির সকল সদস্য ছিলেন প্রতিষঠান জমিদার।
এই প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো : 
১) সবার জন্য এই প্রতিষ্ঠান খাতায়-কলমে উন্মুক্ত থাকলেও সাধারণ মানুষ এই সভার সদস্য হবার বিশেষ সুযোগ পেতেন না।
২) দাবি আদায়ের ক্ষেত্রেও সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

১৬) নারী সমাজের উন্নতির জন্য প্রকাশিত দুটি পত্রিকার নাম লেখ।

উনিশ শতকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত যে সমস্ত পত্রপত্রিকা নারী সমাজের উন্নতি কল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি পত্রিকার নাম হল :
১) হিন্দু পেট্রিয়ট (১৮৫৩) : শুভ বিবাহ নারী শিক্ষার সমর্থনে জনমত গঠনে ব্যাপক প্রচার চালায়।

২) বামাবোধিনী পত্রিকা (১৮৬৩) : নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানো, নারীর সচেতনতা বৃদ্ধি করা, তাদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়যোগ্য করে তোলা, এবং নারীদের মনের কথা তুলে ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

১৭) ইতিহাসের উপাদান রূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কি?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

১৮) জাতীয় মহাফেজখানা এ কি কি সংরক্ষিত হয়?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

১৯) জাতীয়তাবাদী ভাবধারার বিকাশে স্বামী বিবেকানন্দের ভূমিকা লেখো।

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

২০) ‘নব্য বেদান্ত’-এর মূল কথা কি?

স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মীয় চিন্তাধারার গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ‘নব্য বেদান্তবাদ’।

অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের বলা হয় যে, ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা। রম্য ও আত্মা পৃথক কিছু নয়। কিন্তু বিবেকানন্দ অদ্বৈত বেদান্তের নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেন, জগতের সর্বত্রই ব্রহ্মার উপস্থিতি রয়েছে। সাধারণ মানুষের সেবা করাই ব্রহ্মের সেবা করা। তাঁর অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের এই নতুন ব্যাখ্যাই ‘নব্য বেদান্তবাদ’ নামে পরিচিত।

তিনি প্রচার করেন ধর্মের তত্ত্ব কেবল মুখে আওড়ালে হবে না তাকে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। তাহারেই ব্যাখ্যা দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং ভারতবাসী সহ বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করে।

২১) রামমোহন রায় ও ইয়ং বেঙ্গল দলের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের লক্ষ্যের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

২২) ব্রাহ্ম আন্দোলনের দুটি সীমাবদ্ধতা লেখ

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

২৩) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য স্মরণীয় কেন?

বাংলাদেশে ছাপাখানার বিকাশে ও সংবাদপত্র প্রকাশের ইতিহাসে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য একটি স্মরণীয় নাম।

তিনি হলেন প্রথম বাঙালি প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা। তিনি প্রথম সচিত্র বাংলা বই ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল প্রকাশ করেছিলেন।

ভারতের প্রথম সংবাদপত্র বেঙ্গল গেজেট বা হিকির গেজেট প্রকাশিত হয় ১৭৮০ সালে। পরবর্তীকালে এই পত্রিকাটি গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

২৪) জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্যগুলো লেখ।

উপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি দূর করে বিকল্প হিসেবে স্বদেশের জন্য একটি জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রসন্নকুমার ঠাকুর সর্বপ্রথম ‘জাতীয় শিক্ষা’ কথাটি ব্যবহার করেন।
এরপর স্বদেশী আন্দোলনের সময় ১৯০৬ সালে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ‘জাতীয় শিক্ষা পরিষদ’ বা ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন’ গড়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রধান উদ্দেশ্য গুলি হল :
১) জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান করা,
২) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশ সেবার মনোভাব জাগিয়ে তোলা,
৩) নৈতিক শিক্ষা দান আবশ্যিক করে তোলা,
৪) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো ইত্যাদি

তিনি এই পরিষদের অধীনে ১৯০৬ বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, যার অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ।

২৫) মধুসূদন গুপ্ত কে ছিলেন?

পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত (1800 - 15 নভেম্বর 1856) ছিলেন একজন বাঙালি ব্রাহ্মণ (বৈদ্য) অনুবাদক এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। তিনি পাশ্চাত্য চিকিৎসায়ও প্রশিক্ষিত ছিলেন এবং ১৮৩৬ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজে (সিএমসি) ভারতে প্রথম মানব ব্যবচ্ছেদ করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। সুশ্রুতের প্রায় 3,000 বছর পরে তিনিই পুনরায় শব ব্যবচ্ছেদে এগিয়ে আসেন।

উনিশ শতকের বাংলায় তিনিই প্রথম বাঙালি শব ব্যবচ্ছেদকারী ডাক্তার যার হাত দিয়ে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে। 

বিকল্প প্রশ্ন :
মধুসূদন গুপ্ত স্মরণীয় কেন?

২৬) ‘ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব’ আইন কি?

ভারতের প্রাচীনতম আদিবাসীদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য গোষ্টি হলো মুন্ডা।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে মুন্ডাদের খুৎকাঠি প্রথা বা যৌথ মালিকানা ব্যবস্থা বাতিল হলে ১৮৯৯ সালে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে ইংরেজ ও জমিদারদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, যা ‘উলগুলান’ নামে পরিচিত। 

দমননীতি চালিয়ে এই বিদ্রোহ দমন করলেও ব্রিটিশ সরকার বাধ্য হয় মুন্ডাদের অনুকূলে প্রজাস্বত্ব আইন বা টেন্যান্সি অ্যাক্ট - ১৯০৮ ঘোষণা করতে, যা ‘ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন’ নামে পরিচিত।
এই আইনের ফলে, ১) গুন্ডাদের খুৎকাঠি প্রথা কিছুটা স্বীকৃতি লাভ করে,
২) মুন্ডাদের বিনা বেতনে বেগার খাটা নিষিদ্ধ হয়,
৩) সরকার মুন্ডাদের অভাব-অভিযোগের সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

২৭) উলগুলান বলতে কী বোঝায়?

উলগুলান (উলঘুলান) শব্দের অর্থ হলো ভয়ঙ্কর বিশৃঙ্খলা বা প্রবল বিক্ষোভ।

১৮৯৯ ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের জমির উপর যৌথ মালিকানা ব্যবস্থা বা খুৎকাঠি প্রথা বাতিল করে নতুন ভূমিব্যবস্থা (চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত) চালু করে। এই ভূমিব্যবস্থাকে সামনে রেখে বহিরাগত জমিদার, মহাজন' ও ঠিকাদাররা মুন্ডাদের উপর জুলুম ও অত্যাচার চালাতে শুরু করে এবং জমিজমা দখল করে নিতে থাকে।

এতে বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে মুন্না সম্প্রদায়ের মানুষ বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তা মুন্ডা বিদ্রোহ নামে খ্যাত। এই বিদ্রোহকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় উলগুলান।

২৮) কারা পাগলাপন্থী নামে পরিচিত?

ময়মনসিংহ জেলার শেরপুর পরগনায় পাহাড়ের পাদদেশে গারো উপজাতির মানুষেরা বসবাস করত। ফকির করিম শাহ চাঁদগাজী এই উপজাতীয়দের মধ্যে এক নতুন ধর্মমত প্রচার করেন।

ধর্মের মূল কথা হলো, সকল মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্ট, কেউ কারো অধীন নয়। সুতরাং উচ্চ-নিচ ভেদাভেদ করা সঙ্গত নয়। এই ধর্মমতের অনুগামীরা বাউল বা পাগলাপন্থী নামে পরিচিত।

করিম শাহ এর মৃত্যুর পর তার পুত্র টিপু শাহ টিপু পাগলের নেতৃত্বে পাগলাপন্থী গারো জনগণ জমিদার ও ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে শামিল হয়। এই আন্দোলন ‘পাগলাপন্থী বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত।

২৯) জাইলোগ্রাফি পদ্ধতি কি?

জাইলোগ্রাফি হল এক ধরনের মুদ্রণ পদ্ধতি। মুদ্রণ ব্যবস্থা বা ছাপাখানায় ব্যবহৃত ব্লক ভিত্তিক এই পদ্ধতিতে কাঠ বা পাথরের ব্লক ব্যবহার করা হয়। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকের চীনে প্রথম এই মুদ্রণ কৌশল আবিষ্কৃত হয়।

৩০) মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে চার্লস উইলকিন্স বিখ্যাত কেন?

চার্লস উইলকিন্স হলেন ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন কর্মকর্তা। তিনি সর্বপ্রথম বাংলা অক্ষরের টাইপ বা নকশা তৈরি করেন। এই কারণে তাকে ‘বাংলা ছাপাখানার জনক’ বা ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ বলে অভিহিত করা হয়।

বাংলায় ছাপার কাজ করার জন্য তিনি ১৭৭৮ সালে আমি জেলার চুঁচুড়ায় একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন।

বিকল্প প্রশ্ন :
কাকে কেন বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়?

৩১) বাংলার ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকার এর ভূমিকা কি ছিল?

বাংলাদেশ ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকার বা পঞ্চানন মল্লিক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
তিনি হচ্ছেন বাংলা ভাষায় ছাপাখানার হরফ নির্মাণের অন্যতম রূপকার। চার্লস উইলকিন্স এর তৈরি বাংলা অক্ষরের টাইপ বা নকশা কে আরো মার্জিত রূপ দিয়ে তিনি এই নতুন হরফ নির্মাণ করেছিলেন।
তার এই হরফে ছাপা হয় হ্যালহেড রচিত একটি পূর্ণাঙ্গ বাংলা বই, যার নাম এ গ্রামার অফ দা বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ।
প্রকৃত অর্থে, তার তৈরি হরফেই প্রথম শুরু হয় বাংলা ভাষায় পূর্ণাঙ্গ বই ছাপার কাজ।

৩২) উপনিবেশিক বিজ্ঞান চর্চার উদ্দেশ্য কি ছিল?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৩৩) রাধানাথ শিকদার কোন বিষয়ে খ্যাতি লাভ করেন?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৩৪) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন কেন কখন নির্মিত হয়?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৩৫) কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠায় রাসবিহারী ঘোষ ও তারকনাথ পালিত এর অবদান কি?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৩৬) মহেন্দ্রলাল সরকার বিখ্যাত কেন?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৩৭) ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রকৃতি কি ছিল?

বাংলাদেশ তিতুমীরের নেতৃত্বাধীন ওহাবী আন্দোলনের চরিত্র প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

রমেশচন্দ্র মজুমদার বিহারীলাল সরকার প্রমূখ এই আন্দোলনকে সাম্প্রদায়িক ও হিন্দু বিরোধী বলে অভিহিত করেছেন।

অন্যদিকে হান্টার, থর্নটন প্রমূখ ঐতিহাসিক এই আন্দোলনে কোন সাম্প্রদায়িকতার ছাপ দেখতে পাননি। নরহরি কবিরাজ ও ডঃ কুয়েমুউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করে একে অত্যাচারী জমিদার নীলকর এবং ইংরেজ বিরোধী বিদ্রোহ বলে দাবি করেছেন।

বস্তুত, সংস্কার আন্দোলন হিসেবে শুরু হলেও এই আন্দোলনে অচিরেই ব্রিটিশ বিরোধী কৃষক আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়।

৩৮) তারিখ ই মোহাম্মদিয়া গুরুত্ব লেখ।

‘তারিখ ই মোহাম্মদিয়া’ কথার অর্থ হল মোহাম্মদ প্রদর্শিত পথ।

আব্দুল ওয়াহাব নামে জনৈক ব্যক্তি অষ্টাদশ শতকে আরব দেশে এক ধরনের সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন, যার মূল ভিত্তি ছিল তারিখ ই মোহাম্মদিয়া

এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামের শুদ্ধিকরণ ঘটানো। আব্দুল ওহাবের নাম অনুসারে এই আন্দোলন ওয়াহাবি আন্দোলন নামে ইতিহাসে পরিচিত।

ভারতে এই আন্দোলনের সূচনা করেন শাহ ওয়ালীউল্লাহ এবং তার পুত্র আজিজ। বাংলাদেশ তিতুমীরের নেতৃত্বে এই আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে।

এই আন্দোলন ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন হিসেবে শুরু হলেও তিতুমীর এই আন্দোলনকে অচিরেই কৃষক আন্দোলনে রূপান্তরিত করেন।

৩৯) বাংলাদেশ ছাপাখানা বিস্তারে জেমস অগাস্টাস হিকি অবদান কি ছিল

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৪০) বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনা বিদ্যাসাগরের ভূমিকা কি ছিল?

অপেক্ষা করো। তাড়াতাড়ি আপলোড হবে। 

৪১ )বর্ণপরিচয় এর গুরুত্ব কি?

৪২) শিশু শিক্ষা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কি বলেছেন?

৪৩) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা দর্শন কি?

৪৪) রবীন্দ্রনাথ কেন ভারতে প্রচলিত শিক্ষাকে প্রাণহীন বলেছেন?

৪৫) বিশ্বভারতী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে স্বতন্ত্র ছিল কেন?

৪৬ )শ্রীনিকেতন কি? কি উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

৪৭) ঝাঁসির রানী বিখ্যাত কেন?

৪৮) বিদ্যোৎসাহিনী সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন?

৪৯) আটশো সাতান্ন সালের ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন এর গুরুত্ব কি?

৫০) হাজী মোহাম্মদ মহসীন স্মরণীয় কেন?

৫১) নবান্ন ও টিনের তলোয়ার নাটক দুটি কাদের লেখা?
৫২) ব্যঙ্গচিত্র কি?
৫৩) রানী শিরোমণি কে ছিলেন?

৫৪) কেনারাম ও বেচারাম কাকে বলা হয়?

‘কেনারাম’ ও ‘বেচারাম’ হল দুই ধরনের ভুয়া বাটখারা। ওজনে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বহিরাগত ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের সঙ্গে কেনা-বেচার সময় এই বাটখারা ব্যবহার করত।

বহিরাগত ব্যবসায়ীরা যখন সাঁওতালদের কাছে কৃষিপণ্য কিনতো, তখন বেশি ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। এই বাটখারা কেনারাম নামে পরিচিত ছিল।

আবার ব্যবসায়ীরা যখন সাঁওতালদের কাছে লবণ চিনি প্রভৃতি ভোগ্য পণ্য বিক্রয় করত, তখন কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত। এই ধরনের কম ওজনের বাটখারা কে বলা হত বেচারাম
ছাপাখানা প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটি বিখ্যাত কেন

৫৫) নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন কি?

৫৬) বিদ্যাসাগরকে বিদ্যাবনিক বলা হয় কেন?

৫৭) বাংলার মুদ্রণ এ ইতিহাসে ‘বটতলা প্রকাশনা’র গুরুত্ব কি?

বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
উনিশ শতকের কলকাতায় মূলত দর্জিপাড়া, শ্যামবাজার, জোড়াসাঁকো, শিয়ালদহ ইত্যাদি জায়গায় জনরুচি (Public Test) অনুযায়ী যেসব প্রকাশনা চলত তা ‘বটতলার প্রকাশনা’ নামে পরিচিত।

ব্রতকথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমসাময়িক ঘটনা রসালো কাহিনী সচিত্র গুপ্ত কথা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে লেখা বাংলা বই সস্তায় ছাপা হতো বটতলার প্রেসগুলিতে।

বটতলা অঞ্চলের যেসব দেশগুলি প্রকাশনা ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কবিতা রত্নাকর, কমলালয়, গ্রেট ইডেন ইত্যাদি।

পেপারের ব্যবহার এবং স্বদেশী কারিগরির মুন্সিয়ানা ইত্যাদির জন্য বটতলা প্রকাশনার বই এর দাম সস্তা হওয়ায় বিপুলভাবে এর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। উনিশ শতকে জন শিক্ষার বিস্তারে একতলা প্রকাশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
-------------x------------

মন্তব্যসমূহ

বহুল পঠিত প্রশ্ন-উত্তর এখানে

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

অথবা           টীকা লেখা:- সাঁওতাল বিদ্রোহ  উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল ।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য,  ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ করেছিল তার  প্রভাব ভারতীয় উপজাতিদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।  তাই শেষ পর্যন্ত 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।    সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিস্তীর্ণ  অঞ্চলের  শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর রেগে গিয়েছিল। যা হলো নিম্নরুপ:-  ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার :- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে  জমি তৈরি করে  চাষবাস শুরু করলে । ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে  এমন বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।    খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত :- ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয় । ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।  গ)   সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত :- 50 থেকে 500 হরে

কে, কবে, কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণ  লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’  প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, তারা মনে করতেন, ১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে  স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে  এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে। ২) এছাড়া ভারতীয়দের  ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে  তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। ৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা  আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব  আরোপ করেন এবং  ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে  এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন। মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।

খুৎকাঠি প্রথা কী?

খুঁৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানা চালু করলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। ফলে মুন্ডারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের এই প্রথা (ভূমি ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনে। অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম' কথার অর্থ কী? নীলকররা নীল চাষীদের উপর

নতুন সামাজিক ইতিহাস কী?

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ । অতীতে ইতিহাসে শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা কিংবা অভিজাতদের কথা লেখা থাকতো। বর্তমানে এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। এখন এখানে সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্তজদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবনের বিবর্তনের কথা ও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাসচর্চার এই ধারা  নতুন সামাজিক ইতিহাস  নামে পরিচিত।

নীল বিদ্রোহের কারণ কী? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখ।

নীল বিদ্রোহ : কারণ, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব : আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়। ফলে সেখানে বস্ত্র শিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা বাড়ে। ১৮৩৩ সালে সনদ আইন এর ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লুপ্ত হলে কোম্পানির কর্মচারিরা ব্যক্তিগতভাবে নীল চাষে নেমে পড়ে। অধিক মুনাফার আশায় এইসব কর্মচারীরা নীল চাষীদের উপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে। এই শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীল চাষিরা হাজার ১৮৫৯ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ নীল বিদ্রোহ নামে খ্যাত।  নীল বিদ্রোহের কারণ  (পটভূমি ) : নীল বিদ্রোহের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লক্ষ্য করা যায়। ১) কৃষকের ক্ষতি: নীল চাষের চাষের যে খরচ হতো মিল বিক্রি করে চাষির সে খরচ উঠতো না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ২) খাদ্যশস্যের অভাব:  নীল চাষ করতে গিয়ে কৃষকেরা খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রয়োজন মতো করতে পারত না। কারণ নীলকর সাহেবরা চাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতেন। ফলে চাষির ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ৩) নীলকরদের অত্যাচার :  চাষিরা নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে নীলকর সাহেবরা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনা করো:

১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি: ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে. এক পক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহী বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানা নাম অভিহিত করেছেন। ১) সিপাহী বিদ্রোহ:   ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস, এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহী বিদ্রোহ বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য - ক)১৮৫৭ সালের বিদ্রোফের চালিকাশক্তি ছিলেন সিপাহীরাই। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিফ্রহের সূচনা হয়েছিল। খ) এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ২) জাতীয় আন্দোলন: ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা

মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শন ও জীবনদর্শনের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকৃতি। তাঁর মতে, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হল, প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিক্ষার বিচ্ছিন্নতা। আর এজন্য আমাদের দেশের শিক্ষা শুধু অসম্পূর্ণই নয়, যান্ত্রিক এবং হৃদয়হীনও বটে। শিক্ষা ও তার লক্ষ্য : তাঁর মতে, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্ত:প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতির উপযোগী, দক্ষ ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হলো শিক্ষার লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণের উপায় : তাঁর মতে, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একজন শিশুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে তার দেহ মন সুসংগঠিত করতে হয়। এটা করলেই সে পরমসত্তাকে উপলব্ধি করতে পারে। লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ : শান্তিনিকেতনের ভাবনা : ১) শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা : এই কারণেই তিনি প্রাচীন তপবনের শিক্ষার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছিলেন। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রকৃতির স্নিগ্ধ ও সুশীতল পরিবেশে বসবাস করে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। ২) হিতৈষী তহবিল তৈরি : পল্লীগ্রামের মানুষের কল্যাণে এবং কৃষির উন্নতির জন্য গড়ে তোলেন হিতৈষী তহবি

শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ?

'শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ? লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে  ১৮৩৫  সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা  'মেকলে মিনিটস'  নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি   ' চুঁইয়ে পড়া নীতি'   নামে পরিচিত। 

তিন আইন কী?

 তিন আইন কী ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল ' তিন আইন'   পাস হওয়া।  ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং  ১৮৭২  সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ফলে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ  প্রথা নিষিদ্ধ এবং   অসবর্ণ বিবাহ  বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে ' তিন আইন'  নামে পরিচিত।