সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জমিদার সভা ও ভারত সভার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।

জমিদার সভা ও ভারত সভা  জমিদার সভা এবং ভারত সভা উভয়ই মূলত রাজনৈতিক সংগঠন। তবে এই সংগঠন দুটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য বিশ্লেষণ করলে এদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জমিদার সভা ও ভারত সভার পার্থক্য : ১) জমিদার সভা হল ভারতের প্রথম উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সংগঠন, যা ১৮৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে ভারত সভা তৈরি হয় ১৮৭৬ সালে। ২) জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয় দ্বারকানাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাজা রাধাকান্ত দেব-এর সভাপতিত্বে। কিন্তু ভারত সভা প্রতিষ্ঠিত হয় মূলত সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবং আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী প্রমুখের সহযোগিতায়। ৩) জমিদার সভার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা। অন্যদিকে ভারত সভার উদ্দেশ্য ছিল আপামর ভারতীয়দের সার্বিক কল্যাণ সাধন ও স্বার্থ রক্ষা করা।

সভা সমিতির যুগ বলতে কী বোঝো?

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ জেগে ওঠে। জাতীয়তাবাদের বিকাশের শুরুতে ভারতীয়রা উপলব্ধি করে যে অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। এই প্রেক্ষাপটে উনিশ শতকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কতকগুলি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। এইভাবে উনিশ শতকের বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠায় এই শতককে সভা সমিতির যুগ বলে অভিহিত করা হয়। বিকল্প প্রশ্ন : ১) কে কোন সময়কে কেন 'সভা সমিতির যুগ' বলে অভিহিত করেছেন? ২) উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে 'সভা সমিতির যুগ' বলা হয় কেন?

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে 'সভা সমিতির যুগ' বলা হয় কেন?

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ জেগে ওঠে। জাতীয়তাবাদের বিকাশের শুরুতে ভারতীয়রা উপলব্ধি করে যে, অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের স্বার্থরক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। এই প্রেক্ষাপটে উনিশ শতকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কতকগুলি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। এইভাবে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে বেশ কিছু রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠায় ডক্টর অনিল শীল এই শতককে ' সভা সমিতির যুগ'  বলে অভিহিত করেছেন। বিকল্প প্রশ্ন : ১) কে কোন সময়কে কেন 'সভা সমিতির যুগ' বলে অভিহিত করেছেন?

ভারত সভা গঠনের উদ্দেশ্য কি ছিল?

১৮৭৬ সালে রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবং আনন্দমোহন বসু শিবনাথ শাস্ত্রী প্রমুখের সহযোগিতায় কলকাতায় গড়ে ওঠে 'ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন' বা 'ভারত সভা' । এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা প্রধান উদ্দেশ্য ছিল : ১) ভারতীয়দের সার্বিক কল্যাণ সাধন ও স্বার্থ রক্ষা করা। ২) এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ভারতীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটানো। এই দুটি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ভারত সভা কিছু নির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করে। যেমন, ১) জনমত গঠন করা, ২) রাজনৈতিক স্বার্থে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করা, ৩) হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্থাপন করা এবং ৪) স্বল্পশিক্ষিত সাধারণ ভারতীয়দের রাজনৈতিক গণ আন্দোলনে শামিল করা। বিকল্প প্রশ্ন : ১) কে কতসালে ভারতসভা প্রতিষ্ঠা করেন? এর উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কী ছিল? ২) কে কতসালে কেন ভারতসভা গড়ে তোলেন?

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

ইলবার্ট বিলের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

ইলবার্ট বিল : লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে ভারতীয় বিচারকরা অভিযুক্ত কোন ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট যে খসড়া বিল রচনা করেন তা  ইলবার্ট বিল  (১৮৮৩) নামে পরিচিত। প্রতিক্রিয়া : এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। এই বিলের সমর্থনে (পক্ষে) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভারত সভা তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। অন্যদিকে শ্বেতাঙ্গ ইংরেজরা এই বিলের বিরুদ্ধে (বিপক্ষে) ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে। তাদের আন্দোলনের চাপে পড়ে ব্রিটিশ সরকার একসময় এই বিল প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪  (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮  (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব নির্ণয় করো।

ইলবার্ট বিল : লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে ভারতীয় বিচারকরা অভিযুক্ত কোন ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট যে খসড়া বিল রচনা করেন তা ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। শ্বেতাঙ্গ ইংরেজরা এই বিলের বিরুদ্ধে (বিপক্ষে) ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুললে ব্রিটিশ সরকার একসময় এই বিলটি সংশোধন করতে বাধ্য হয়। গুরুত্ব : ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১) এই আন্দোলনের ফলে জাতীয় মর্যাদা সম্পর্কে ভারতবাসীর সচেতনতা বৃদ্ধি পায়, ২) ব্রিটিশ শাসনের প্রতি বেশিরভাগ ভারতীয় মোহভঙ্গ ঘটে, ৩) এই আন্দোলন থেকে ভারতবাসী উপলব্ধি করে যে, সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনের দ্বারাই সরকারের নীতি ও কার্যাবলীকে প্রভাবিত করা যায়, ৪) ভারতবাসী এও বুঝতে পারে যে, স্বাধীনতা লাভ করতে না পারলে ভারতবাসী প্রকৃত মর্যাদা ও নিরাপত্তা পাবেনা। অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪  (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো।

ভারতীয় অরণ্য আইন কী?

ভারতীয় অরণ্য আইন : ব্রিটিশ সরকার ১৮৬৫ সালে এক আইন বলে এদেশের অরণ্য সম্পদের উপর ভারতীয়দের অধিকার খর্ব করে অরণ্য সম্পদকে সরকারি সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে আসে। সরকার ঘোষণা করে যে, অরণ্যে ঘেরা যেকোনো ভূমি হলো সরকারের সম্পত্তি। ১৮৬৫ সালে পাস হওয়া এই  আইন 'ভারতীয় অরণ্য আইন' নামে পরিচিত। উদ্দেশ্য : ভারতীয় অরণ্যের ওপর ব্রিটিশ সরকারের নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে জারি করা এই আইনি পদক্ষেপের ফলে অরণ্যের ওপর নির্ভরশীল ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায় তাদের শতসহস্র বছরের অরণ্যের অধিকার হারিয়ে প্রচন্ড দুর্দশার শিকার হয়। এবং সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায়। চুয়াড়, কোল, সাঁওতাল প্রভৃতি বিদ্রোহ তাদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।  ---------------------------------- বিকল্প প্রশ্ন : ১) কত সালে কী উদ্দেশ্যে ভারতীয় অরণ্য আইন পাস করা হয়? এর ফল কী হয়েছিল? এই অধ্যায়ের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর : ভারতীয় অরণ্য আইন কী?   ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরা

দুদুমিঞা স্মরণীয় কেন?

দুদুমিঞা স্মরণীয় কেন? উনিশ শতকের প্রথমদিকে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা প্রভৃতি অঞ্চলে হাজী শরীয়তুল্লাহর নেতৃত্বে যে ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা ফরাজি আন্দোলন নামে পরিচিত। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মোহাম্মদ মহসিন  অরফে  দুদুমিঞা    এই আন্দোলনকে একটি সুসংহত রূপদান করেন এবং অচিরেই তা কৃষক আন্দোলনে রূপ নেয়। তাঁর নেতৃত্বে ধর্মীয় সংস্কারের লক্ষ্য থেকে সরে এসে ফরাজি আন্দোলন  শেষ পর্যন্ত  রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছিল।  দুদুমিয়ার এই আন্দোলন পরবর্তীকালে বাংলা থেকে ব্রিটিশদের বিতারণে প্রেরণা যুগিয়েছিল। আর এ কারণেই তিনি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ------------------------------------------- বিকল্প প্রশ্ন : ১) দুদুমিঞা কে ছিলেন? তিনি কী কারণে ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করেছেন? ২) মোহম্মদ মহসিন কে ছিলেন? তিনি কী নামে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন এবং কেন? ফরাজি আন্দোলন সম্পর্কিত আরও প্রশ্ন :   ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন ?   দার উল হারব এবং দারুল ইসলাম কথার অর্থ কি ? দুদুমিঞা স্মরণীয় কেন? (তুমি এখন এখানে আছো) ফরাজি আন্দোলনের ব্যর্থত

তিতুমির কে ছিলেন? তিনি কী কারণে খ্যাতি লাভ করেছেন?

  তিতুমির : বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা ছিলেন  তিতুমীর  বা  মীর নিসার আলী । তিনি বারাসাত ও বসিরহাট অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘোষণা করেন এবং নিজেকে বাদশা, তাঁর সহযোগী যথাক্রমে  মঈনুদ্দিন কে প্রধানমন্ত্রী ও  গোলাম মাসুম কে সেনাপতি ঘোষণা করে নারকেলবেরিয়া গ্রামে  বাঁশের কেল্লা  তৈরি করেন এবং প্রশাসনিক দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন। এই ঘটনা  বারাসাত বিদ্রোহ  নামে পরিচিত। বারাসাত বিদ্রোহের এবং ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলেরর নেতা হিসাবে তিনি খ্যাতি লাভ করেছেন।  অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী?   ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম'

চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব কী ছিল?

চুয়াড় বিদ্রোহ : আঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের চুয়াড় জনজাতির মানুষেরা ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ শুরু করে তা ‘চুয়াড় বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত।   চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব আঠারশ সালের জানুয়ারি মাসে গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি অনেক চেষ্টায় এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই বিদ্রোহের ফলে, ১) চুয়ার দের এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল যা পরবর্তীকালে ভারতের শিক্ষিত শিক্ষিত সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করেছিল প্রায় 100 বছর পরে। ২) জমিদার ও কৃষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিদ্রোহের শামিল হয়েছিল যা সচরাচর লক্ষ্য করা যায় না। ৩) তাদের এই আন্দোলনের ফলে বিষ্ণুপুর শহরকে কেন্দ্র করে দুর্গম বনাঞল কে নিয়ে জঙ্গলমহল নামে একটি বিশেষ জেলা গঠন করতে ব্রিটিশরা বাধ্য হয়। ৪) এবং পরবর্তীকালে ভূমি রাজস্ব নির্ধারণের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অধিকতর সাবধানতা অবলম্বন করতে বাধ্য হয়। ------------------------ বিকল্প প্রশ্ন : ১) চুয়াড় বিদ্রোহ কী? এই বিদ্রোহের ফলাফল সংক্ষেপে লেখ।  চুয়াড় বিদ্রোহ সম্পর্কে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প

নীল বিদ্রোহ বলতে কী বোঝ? নীল বিদ্রোহের কারণ কী ছিলো?

নীল বিদ্রোহ  : ১৮৫৯-৬০ সালে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নীল চাষীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিল বাংলার ইতিহাসে নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।   নীলকরদের অত্যাচার : এই বিদ্রোহের পিছনে যে সমস্ত কারণ কার্যকরী ছিল তাদের মধ্যে নীল চাষীদের উপর অকথ্য অত্যাচার সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই অত্যাচারের মাধ্যমে তারা নীলচাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতো। এক্ষেত্রে চাষীদের ১) শারীরিক প্রহার, ২) তাদের গরু-বাছুর নীলকুঠিতে আটকে রাখা, ৩) ঘরে আগুন লাগানো, ৪) তাদের স্ত্রী-কন্যার সম্মানহানি এবং ৫) নীলকুঠিতে আটকে রাখার মত বিষয়গুলি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিল। ৬) এইসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে আইন-আদালত গেলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যেত না। এ সমস্ত কারণে নীল চাষীর ক্রমশ সঙ্গবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহের পথে অগ্রসর হয়।  ----------x---------- বিকল্প প্রশ্ন : ১) নীল বিদ্রোহ বলতে কী বোঝ? এই বিদ্রোহের কারণ কী ছিলো? 📢  নীল বিদ্রোহ  সংক্রান্ত  আরও প্রশ্ন ও উত্তর  পেতে  নিচের লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করো।  ১)  নীল বিদ্রোহ বলতে কী বোঝ? এই বিদ্রোহের মূল কারণ কী ছিল? ২)  নিলকররা কীভাবে নীল চাষীদের ওপর অত্যাচার করত? ৩)  নীল

দার উল হারব এবং দারুল ইসলাম কথার অর্থ কি?

 দার উল হারব এবং দারুল ইসলাম কথার অর্থ কি?  দার উল হারব কথার অর্থ : দার-উল-হারব শব্দের অর্থ হলো বিধর্মীদের দেশ। বাংলাদেশ ওয়াহাবি ও ফরাজী আন্দোলনের সময় এই শব্দটি ব্যবহার করে ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষকে ' বিধর্মীদের শাসিত দেশ ' বলে চিহ্নিত করা হয় এবং জনগণকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়ার ডাক দেওয়া হয়। দারুল ইসলাম  কথার অর্থ : অন্যদিকে দার-উল-ইসলাম শব্দের অর্থ হলো ইসলামের পবিত্র ভূমি বা দেশ। আন্দোলনকারীরা ব্রিটিশ শক্তিকে হঠিয়ে দেশকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের বাসযোগ্য করে তোলার কথা বলে তাদেরকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে উৎসাহিত করার জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করতো। বিকল্প প্রশ্ন : ১) ওয়াহাবী ও ফরাজি আন্দোলনকারিরা ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষকে দার-উল-হারব বলতো কেন? দার-উল-ইসলাম কথাটা তারা কী অর্থে ব্যবহার করতেন? অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর

নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কি ছিল?

  নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা : খ্রিস্টান ধর্মের প্রচারক হলেও এই  মিশনারিদের  নীলবিদ্রোহের সমর্থনে (1859 খ্রিঃ)  গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা ছিল। খ্রিস্টান মিশনারিরা  এই বিদ্রোহেই প্রথম  বিদ্রোহীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ইংল্যান্ডের চার্চ মিশনারি সোসাইটির ৩ জন সদস্য, জার্মান মিশনারির বমভাইটস, ফ্রেডারিক সুর, জে.জি. লিংকে, সর্বোপরি জেমস লঙ -এর ভূমিকা গুরুত্ব পূর্ণ। জেমস লং দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নজরে আনার চেষ্টা করেন নীলচাষীদের দুর্দশার কথা। -------------------------------------- বিকল্প প্রশ্ন : ১) নীল বিদ্রোহ কত সালে হয়? এই বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীরা কী ভূমিকা নিয়েছিলেন? ২) নীল বিদ্রোহ সমর্থনকারি কয়েকজন খ্রিস্টান মিশনারীর নাম লেখো।  অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের

নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকা কি ছিল?

  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকা : ১৮৫৯-৬০ সালে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নীল চাষীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিল বাংলার ইতিহাসে নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহকে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের একাংশ সমর্থন করে নীল চাষীদের পক্ষে দাঁড়ায়। এদের মধ্যে হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১) তিনি তার পত্রিকার মাধ্যমে নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করে নীল বিদ্রোহীদের পক্ষে জনমত গঠন করেন। ২) তার নীলা নিরলস প্রচেষ্টা ও ক্ষুরধার লেখনীর গনি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ইংরেজদের সম্পর্কে মোহভঙ্গ ঘটে এবং তারা কৃষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠে। ৩) এছাড়া তিনি নীলচাষীদের আর্থিক সহায়তা এবং মামলা মোকদ্দমা চালানোর ক্ষেত্রে আইনি সহায়তার ব্যবস্থা করে বিদ্রোহীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বিকল্প প্রশ্ন : ১) নীল বিদ্রোহ কত সালে হয়?  নী ল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকা কি ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী

বহুল পঠিত প্রশ্ন-উত্তর এখানে

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

অথবা           টীকা লেখা:- সাঁওতাল বিদ্রোহ  উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে সমস্ত উপজাতি বিদ্রোহ হয়েছিল ।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাঁওতাল বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশিক শাসন বজায় রাখার জন্য,  ব্রিটিশ সরকার যে সমস্ত ভূমি সংস্করণ করেছিল তার  প্রভাব ভারতীয় উপজাতিদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।  তাই শেষ পর্যন্ত 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । যা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।    সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ বিহারের রাজমহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিস্তীর্ণ  অঞ্চলের  শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা বিভিন্ন কারণে ব্রিটিশদের উপর রেগে গিয়েছিল। যা হলো নিম্নরুপ:-  ক) জমির উপর ব্রিটিশদের অধিকার :- সাঁওতালরা জঙ্গল পরিষ্কার করে  জমি তৈরি করে  চাষবাস শুরু করলে । ব্রিটিশ সরকার সাঁওতালদের কাছে  এমন বিপুল হারে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা সাঁওতালরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।    খ) সাঁওতালদের সর্বস্বান্ত :- ব্রিটিশ সরকার  ভূমিরাজস্ব ছাড়াও অন্যান্য কর ও ঋণের দায়ভার সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেয় । ফলে সাঁওতালরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।  গ)   সাঁওতালদের ঋণগ্রস্ত :- 50 থেকে 500 হরে

কে, কবে, কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণ  লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’  প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ, তারা মনে করতেন, ১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে  স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে  এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে। ২) এছাড়া ভারতীয়দের  ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে  তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। ৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা  আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব  আরোপ করেন এবং  ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে  এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন। মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।

খুৎকাঠি প্রথা কী?

খুঁৎকাঠি বা কুন্তকট্টি হল এক ধরনের ভূমি ব্যবস্থা যা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই ব্যবস্থায় জমিতে ব্যক্তি মালিকানার পরিবর্তে যৌথ মালিকানা স্বীকৃত ছিল। ব্রিটিশ সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করে ব্যক্তি মালিকানা চালু করলে মুন্ডাদের জমি গুলি বহিরাগত জমিদার, ঠিকাদার ও মহাজনদের হাতে চলে যায়। ফলে মুন্ডারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯০৮ সালে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের এই প্রথা (ভূমি ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনে। অন্যান্য প্রশ্ন : ভারতীয় অরণ্য আইন কী? ব্রিটিশ সরকার কেন অরণ্য আইন পাশ করেছিল? বারাসাত বিদ্রোহ কী? বাঁশেরকেল্লা কী? খুৎকাঠি প্রথা কী? দাদন প্রথা কী? সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হয় কেন? ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য আদর্শ কী ছিল? ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন? তিতুমীর স্মরণীয় কেন? দুদুমিয়া স্মরণীয় কেন? দামিন-ই-কোহ কী? মুন্ডা বিদ্রোহের লক্ষ্য কী ছিল?  নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখার্জীর ভূমিকাকী ছিল? নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কী ছিল? 'দার-উল-হারব' এবং 'দার-উল- ইসলাম' কথার অর্থ কী? নীলকররা নীল চাষীদের উপর

নতুন সামাজিক ইতিহাস কী?

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ । অতীতে ইতিহাসে শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা কিংবা অভিজাতদের কথা লেখা থাকতো। বর্তমানে এই ধারায় পরিবর্তন এসেছে। এখন এখানে সাধারণ মানুষ, নিম্নবর্গীয় সমাজ, এমনকি প্রান্তিক অন্তজদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবনের বিবর্তনের কথা ও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাসচর্চার এই ধারা  নতুন সামাজিক ইতিহাস  নামে পরিচিত।

নীল বিদ্রোহের কারণ কী? এই বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখ।

নীল বিদ্রোহ : কারণ, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব : আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়। ফলে সেখানে বস্ত্র শিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা বাড়ে। ১৮৩৩ সালে সনদ আইন এর ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লুপ্ত হলে কোম্পানির কর্মচারিরা ব্যক্তিগতভাবে নীল চাষে নেমে পড়ে। অধিক মুনাফার আশায় এইসব কর্মচারীরা নীল চাষীদের উপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচার শুরু করে। এই শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীল চাষিরা হাজার ১৮৫৯ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ নীল বিদ্রোহ নামে খ্যাত।  নীল বিদ্রোহের কারণ  (পটভূমি ) : নীল বিদ্রোহের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ লক্ষ্য করা যায়। ১) কৃষকের ক্ষতি: নীল চাষের চাষের যে খরচ হতো মিল বিক্রি করে চাষির সে খরচ উঠতো না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ২) খাদ্যশস্যের অভাব:  নীল চাষ করতে গিয়ে কৃষকেরা খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রয়োজন মতো করতে পারত না। কারণ নীলকর সাহেবরা চাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতেন। ফলে চাষির ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ৩) নীলকরদের অত্যাচার :  চাষিরা নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে নীলকর সাহেবরা তাদের উপর নির্মম অত্যাচার। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনা করো:

১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি: ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে. এক পক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহী বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানা নাম অভিহিত করেছেন। ১) সিপাহী বিদ্রোহ:   ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস, এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহী বিদ্রোহ বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য - ক)১৮৫৭ সালের বিদ্রোফের চালিকাশক্তি ছিলেন সিপাহীরাই। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিফ্রহের সূচনা হয়েছিল। খ) এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ২) জাতীয় আন্দোলন: ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা

মানুষ, প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শন ও জীবনদর্শনের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকৃতি। তাঁর মতে, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় ত্রুটি হল, প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিক্ষার বিচ্ছিন্নতা। আর এজন্য আমাদের দেশের শিক্ষা শুধু অসম্পূর্ণই নয়, যান্ত্রিক এবং হৃদয়হীনও বটে। শিক্ষা ও তার লক্ষ্য : তাঁর মতে, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্ত:প্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতির উপযোগী, দক্ষ ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হলো শিক্ষার লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণের উপায় : তাঁর মতে, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য একজন শিশুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে তার দেহ মন সুসংগঠিত করতে হয়। এটা করলেই সে পরমসত্তাকে উপলব্ধি করতে পারে। লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ : শান্তিনিকেতনের ভাবনা : ১) শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা : এই কারণেই তিনি প্রাচীন তপবনের শিক্ষার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতন স্থাপন করেছিলেন। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রকৃতির স্নিগ্ধ ও সুশীতল পরিবেশে বসবাস করে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। ২) হিতৈষী তহবিল তৈরি : পল্লীগ্রামের মানুষের কল্যাণে এবং কৃষির উন্নতির জন্য গড়ে তোলেন হিতৈষী তহবি

ইলবার্ট বিল কি?

লর্ড রিপন ভারতে আসার আগে কোন ভারতীয় বিচারকরা কোন অভিযুক্ত ইংরেজের বিচার করতে পারত না। এই বৈষম্য দূর করতে লর্ড রিপনের পরামর্শে তার আইন সচিব ইলবার্ট একটি বিলের খসড়া রচনা করেন। এই  খসড়া বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজ অভিযুক্তের বিচার করার অধিকার দেওয়া হয়। এই খসড়া বিলই ইলবার্ট বিল (১৮৮৩) নামে পরিচিত। এই বিলের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, ইলবার্ট বিল আন্দোলন ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিকল্প প্রশ্ন : কতসালে ইলবার্ট বিল পাস হয়? এর উদ্দেশ্য কী ছিল? অন্যান্য প্রশ্ন : বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৪ (সাত-আট বাক্যে উত্তর)   ইলবার্ট বিল কী? এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল? ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব লেখো। ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন । প্রশ্নের মান - ৮ (পনের-ষোলো বাক্যে উত্তর) ইলবার্ট বিল আন্দোলন বলতে কী বোঝ? এই আন্দোলনের তাৎপর্য কী ছিল? 

শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ?

'শিক্ষার চুঁইয়ে পড়া নীতি' বলতে কী বোঝ? লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে  ১৮৩৫  সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা  'মেকলে মিনিটস'  নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি   ' চুঁইয়ে পড়া নীতি'   নামে পরিচিত। 

তিন আইন কী?

 তিন আইন কী ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল ' তিন আইন'   পাস হওয়া।  ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং  ১৮৭২  সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের ফলে  বাল্যবিবাহ  ও  বহুবিবাহ  প্রথা নিষিদ্ধ এবং   অসবর্ণ বিবাহ  বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে ' তিন আইন'  নামে পরিচিত।