বারদৌলি সত্যাগ্রহের প্রতি জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব :
![]() |
বারদৌলি সত্যাগ্রহের প্রতি জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব |
বারদৌলি সত্যাগ্রহের প্রতি জাতীয় কংগ্রেসের কীরূপ মনোভাব ছিল?
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে তুলার দাম কমে যাওয়া ও ৩০ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির প্রতিবাদে গুজরাটের বারদৌলি তালুকের কৃষকরা ১৩টি স্থানে ব্যাপক কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলন ‘বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন’ নামে পরিচিত।
বারদৌলি সত্যাগ্রহের কারণ :
তবে তুলোর দাম কমে যাওয়া ও রাজস্ব বৃদ্ধি ছাড়াও এই আন্দোলনের পিছনে আরও কিছু কারণ ছিল। যেমন,
- উচ্চবর্ণের ‘উজালীপারাজ’ বা সাদা মানুষদের দ্বারা ‘কলিপারাজ’ বা কালো মানুষদের ওপর অত্যাচার ও নারী নির্যাতন।
- ‘হালিপ্রথা’র মাধ্যমে বংশানুক্রমিকভাবে বাধ্যতামূলক শ্রমদান
- মহাজনদের শোষণ।
- দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, ইত্যাদি।
এ সমস্ত কারণে স্থানীয় নেতা কল্যানী মেহতা ও কুনবেরজি মেহতা এবং দয়ালজি দেশাই কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
বারদৌলি সত্যাগ্রহ ও কংগ্রেসের মনোভাব :
প্রথমদিকে এই আন্দোলনের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের তেমন কোন যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু ১৯২৫ সালে বারদৌলিতে ভয়ংকর বন্যা এবং ১৯২৭ সালে ৩০ শতাংশ খাজনা বৃদ্ধি করলে কৃষকরা ভয়ংকর সংকটের মধ্যে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে মেহেতা ভ্রাতৃদ্বয় বল্লবভাই প্যাটেলকে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করেন। ১৯২৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে গান্ধীজীর নির্দেশে বল্লভভাই প্যাটেল বারদৌলিতে আসেন এবং কংগ্রেস নেতারা সত্যাগ্রহের আদর্শ প্রচার করে জনগণকে সচেতন করে তুলতে থাকেন।
এরপর বল্লবভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে বারদৌলির কৃষকরা খাজনা প্রদান বন্ধ করার শপথ নেয়। প্যাটেল বারদৌলি অঞ্চলকে ১৩ টি অংশে বিভক্ত করে বিভিন্ন অংশের আন্দোলন পরিচালনার দায়িত্ব পৃথক পৃথক নেতাদের হাতে তুলে দেন। ছাত্র যুব সহ ১৫০০ স্বেচ্ছাসেবক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলনে মহিলারাও যথেষ্ট সংখ্যায় যোগদান করেন। মিঠুবেন প্যাটেল, মনিবেন প্যাটেল, সারদা মেহতা প্রমুখ নারী সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।
গান্ধীজী ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ২ আগস্ট বারদৌলি আসেন। বল্লভভাই প্যাটেলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে, তিনি এই আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। সরকার আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য যে তদন্ত কমিশন গঠন করেন, তার সুপারিশ গান্ধীজীর আহবানে কৃষকরা মেনে নেয়।
বারদৌলি সত্যাগ্রহের গুরুত্ব বা তাৎপর্য :
এই সুপারিশে খাজনার হার কমে ৬.০৩ শতাংশ করা হয়। গান্ধীবাদী জাতীয়তাবাদ নিশ্চিতভাবে গুজরাটের কৃষকদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু সুবিধা এনে দেয়। গান্ধীজীর মতে, বারদোলির আন্দোলন স্বরাজ অর্জনের কাজ সহজ করে দিয়েছিল।
-----------xx-----------
এই প্রশ্নটিই অন্য যেভাবে আসতে পারে :
- ‘বারদৌলি সত্যাগ্রহ’ কী? বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলনের কারণ কী ছিল?
- ‘বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন’ বলতে কী বোঝো? এই আন্দোলনে কংগ্রেসের ভূমিকা কী ছিল?
- কত সালে, কার নেতৃত্বে ‘বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন’ সংঘটিত হয়েছিল? এই আন্দোলনের গুরুত্ব কী ছিল?
- বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলনের দুজন স্থানীয় নেতার নাম লেখো। ‘এই আন্দোলনে’ নারীদের ভূমিকা কেমন ছিল?
- বারদৌলি আন্দোলনের পটভূমি কী ছিল? এই আন্দোলন কতটা সফল হয়েছিল?
- কেন বারদৌলিতে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল? ভারতের জাতীয় আন্দোলনে এর তাৎপর্য কী ছিল?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন