সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা
দুই বা তিন বাক্যে উত্তর দাও। প্রশ্নের মান - ২
নীল বিদ্রোহ :
১৮৫৯-৬০ সালে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নীলচাষীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিল বাংলার ইতিহাসে 'নীল বিদ্রোহ' নামে পরিচিত।
নীলকরদের অত্যাচার :
এই বিদ্রোহের পিছনে যে সমস্ত কারণ কার্যকরী ছিল তাদের মধ্যে নীল চাষীদের উপর অকথ্য অত্যাচার সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই অত্যাচারের মাধ্যমে তারা নীলচাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতো। এক্ষেত্রে চাষীদের ১) শারীরিক প্রহার, ২) তাদের গরু-বাছুর নীলকুঠিতে আটকে রাখা, ৩) ঘরে আগুন লাগানো, ৪) তাদের স্ত্রী-কন্যার সম্মানহানি এবং ৫) নীলকুঠিতে আটকে রাখার মত বিষয়গুলি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিল।
নীল বিদ্রোহ :
১৮৫৯-৬০ সালে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নীলচাষীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিল বাংলার ইতিহাসে 'নীল বিদ্রোহ' নামে পরিচিত।
নীলবিদ্রোহের কারণ :
এই বিদ্রোহের পিছনে যে সমস্ত কারণ কার্যকরী ছিল তাদের মধ্যে নীল চাষীদের উপর অকথ্য অত্যাচার সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই অত্যাচারের মাধ্যমে তারা নীলচাষীদের নীল চাষে বাধ্য করতো। এক্ষেত্রে
১) চাষীদের শারীরিক প্রহার,
২) তাদের গরু-বাছুর নীলকুঠিতে আটকে রাখা,
৩) ঘরে আগুন লাগানো,
৪) তাদের স্ত্রী-কন্যার সম্মানহানি এবং
৫) নীলকুঠিতে আটকে রাখার মত বিষয়গুলি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিল।
৬) এছাড়া এইসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে আইন-আদালতে প্রতিকারের উদ্দেশ্যে গেলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যেত না।
এই সমস্ত কারণে নীল চাষীরা ক্রমশ সঙ্গবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহের পথে অগ্রসর হয়।
লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে 'জনশিক্ষা কমিটি'র সভাপতি নিযুক্ত হন। এসময় এদেশে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্নে এই কমিটির সদস্যরা প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী - এই দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। উগ্র পাশ্চাত্যবাদী মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবী জানিয়ে ১৮৩৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লর্ড বেন্টিং-এর কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেন। এই প্রস্তাব 'মেকলে মিনিটস' বা 'মেকলে প্রস্তাব' নামে পরিচিত।
জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ১৮৩৫ সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবিতে লর্ড বেন্টিং-এর কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেন, যা মেকলে মিনিটস বা 'মেকলে প্রস্তাব' নামে পরিচিত।
তাঁর মতে, এ দেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে 'চুইয়ে পড়া নীতি' অনুসারে তা ক্রমশ সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এর ফলে ভারতে এমন একটি সম্প্রদায়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যারা ‘রক্তবর্ণে ভারতীয় হলেও রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায়’ ইংরেজদের সমতুল্য হয়ে যাবে।
তাঁর সুপারিশ মেনে লর্ড বেন্টিং এদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকে সরকারি নীতি হিসেবে ঘোষণা করেন। ফলে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে।
লর্ড বেন্টিং-এর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ১৮৩৫ সালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব দেন যা 'মেকলে মিনিটস' নামে পরিচিত।
এই প্রস্তাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের স্বপক্ষে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং তাদের দ্বারা তা চুইয়ে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ভারতীয়রা রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় ইংরেজদের মত হয়ে উঠবে। ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মেকলের নেওয়া এই নীতি 'চুঁইয়ে পড়া নীতি' নামে পরিচিত।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্য নিয়ে ১৮৪২ সালে 'কাউন্সিল অফ এডুকেশন' গঠিত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বড়লাট হার্ডিঞ্জ ১৮৪৪ সালে ঘোষণা করেন যে, সরকারি চাকরিতে ইংরেজি ভাষা জানা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
লর্ড হার্ডিঞ্জের এই ঘোষণাকে সামনে রেখে 'বোর্ড অফ কন্ট্রোল'-এর সভাপতি স্যার চার্লস উড ১৮৫৪ সালে শিক্ষা বিষয়ক একটি নির্দেশনামা ( উডের ডেসপ্যাচ) প্রচার করেন, যার ভিত্তিতে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু হয়।
বস্তুত হার্ডিঞ্জের ঘোষণা ভারতীয়দের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণের বিষয়ে উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়। এবং এই পটভূমিতে উডের ডেসপ্যাচ অনুসারে ১৮৫৭ সালে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮১৩ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট 'চার্টার অ্যাক্ট' বা 'সনদ আইন' পাস করে ঘোষনা করে যে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিবছর এক লক্ষ টাকা ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য ব্যয় করবে।
এই ঘোষণা অনুযায়ী জনশিক্ষা-নীতি নির্ধারণের উদ্দেশ্যে ১৮২৩ সালে 'জনশিক্ষা কমিটি' গঠিত হয়। এই কমিটি কলকাতায় একটি সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিলে রাজা রামমোহন রায় বড়লাট লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি লিখে সংস্কৃত শিক্ষার পরিবর্তে ভারতে ইংরেজি ও আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার দাবি জানান।
ফলে, এদেশে প্রাচ্য, না পাশ্চাত্য - কোন ধরণের শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেয়া উচিত, সে বিষয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, যা 'পাশ্চাত্যবাদী বনাম প্রাচ্যবাদী বিতর্ক' নামে পরিচিত।
এই বিতর্কে যারা পাশ্চাত্য শিক্ষার পক্ষে ছিলেন তারা ( যেমন, মেকলে, আলেকজান্ডার ডাফ, সন্ডার্স, কলভিন প্রমূখ) 'পাশ্চাত্য বাদী' এবং যারা প্রাচ্য শিক্ষার পক্ষে ছিলেন তারা ( যেমন, প্রিন্সেপ, কোলব্রোক, উইলসন) 'প্রাচ্যবাদী' নামে পরিচিতি লাভ করে।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের জন্য লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৮৪৪ সালে ঘোষণা করেন যে, সরকারি চাকরিতে ইংরেজি ভাষা জানা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই কাজকে আরও উৎসাহিত করার জন্য ১৮৫৪ সালে কোম্পানির বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন। এই নির্দেশনামা 'উডের ডেসপ্যাস' নামে পরিচিত।
এই নির্দেশনামায় সুপারিশগুলি হল -
১) কোলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
২) একটি পৃথক শিক্ষাদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা।
৩) শিক্ষক-শিক্ষন বিদ্যালয় স্থাপন করা।
৪) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
৫) বিদ্যালয়গুলিতে সরকারি অনুদান দেওয়া।
৬) মাতৃভাষায় বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করা।
৭) স্ত্রীশিক্ষার ব্যবস্থা করা।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের জন্য লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৮৪৪ সালে ঘোষণা করেন যে, সরকারি চাকরিতে ইংরেজি ভাষা জানা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই কাজকে আরও উৎসাহিত করার জন্য ১৮৫৪ সালে কোম্পানির বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন। (এই নির্দেশনামা 'উডের ডেসপ্যাস' নামে পরিচিত।)
এই নির্দেশনামায় প্রকাশিত হওয়ার ফলে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই পর্বেই ১) কোলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ২) একটি পৃথক শিক্ষাদপ্তর প্রতিষ্ঠা হয়। ৩) শিক্ষক-শিক্ষন বিদ্যালয় স্থাপন করা। ৪) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আর এই কারণেই এই নির্দেশনামাকে 'ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ বলা হয়।
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৮১৩ সালের 'চার্টার অ্যাক্ট' বা 'সনদ আইন' পাস করে ঘোষণা করে যে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিবছর এক লক্ষ টাকা ভারতীয়দের জনশিক্ষার জন্য ব্যয় করবে। এই অর্থ ব্যয় করার ক্ষেত্রে গঠিত ‘জনশিক্ষা কমিটি’ ‘পাশ্চাত্যবাদী ও প্রাচ্যবাদী’ এই দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
অবশেষে পাশ্চাত্যবাদীরা টমাস মেকলে এবং রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে ওই অর্থ ইংরেজি ও আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে ব্যয় করার জন্য সরকারকে বাধ্য করে। ফলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়।
লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ সালে কলকাতায় ‘ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন।
কারণ, তারা মনে করতেন,
১) ভারতীয়রা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা পেলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে উঠবে এবং এদেশে কোম্পানির শাসন সংকটের মধ্যে পড়বে।
২) এছাড়া ভারতীয়দের ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলে তারা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে।
৩) এই আশঙ্কা থেকেই মূলত তারা আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিবর্তে সংস্কৃত ও আরবি-ফারসি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং ধর্মভিত্তিক সনাতন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ইংরেজ রাজকর্মচারীদের ভারতীয়দের ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষিত করে এদেশে কোম্পানির শাসনকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করেন।
মূলত, এই কারণেই লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গড়ে তোলেন।
বাংলার হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে ১৮০০ সালে একটি ছাপাখানা গড়ে ওঠে। নাম 'শ্রীরামপুর মিশন প্রেস'। এই প্রেসটি গড়ে তোলেন উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড এবং জোসুয়া মার্শম্যান নামে তিনজন মিশনারি। বাংলার ছাপাখানার ইতিহাসে এঁরা 'শ্রীরামপুর ত্রয়ী' নামে পরিচিত।
বাংলায় ১৯ শতকে ছাপাখানা তথা মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল 'শ্রীরামপুর মিশন প্রেস'। আর এই প্রেস গড়ে তুলতে উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড এবং জোসুয়া মার্শম্যান নামে তিনজন মিশনারির গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। তাঁদের সমবেত চেষ্টায় এই ছাপাখানায় ১৮৩২ সালের মধ্যে দু'লক্ষ ১২ হাজার গ্রন্থ ছাপা হয়েছিল।
ছাপাখানার ইতিহাসে তিনজনের এই অবদানের স্বীকৃতি দিতেই এদেরকে 'শ্রীরামপুর ত্রয়ী' নামে অভিহিত করা হয়।
উনিশ শতকে বিকল্প চিন্তার বিকাশে / বিস্তারে / প্রসারে কিংবা শিক্ষার প্রসারে শ্রীরামপুর ত্রয়ীর 'শ্রীরামপুর মিশন প্রেস' গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
এই তিনজন মিশনারির প্রচেষ্টায় এই মিশন প্রেস থেকে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য প্রকাশ, পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কম দামে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়।
শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে মার্শম্যানের সম্পাদনায় ১৮১৮ সাল থেকে 'দিগদর্শন' নামে একটি মাসিক এবং 'সমাচার দর্পণ' নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে।
শ্রীরামপুরের মিশনারিরা শিক্ষা-বিস্তারের উদ্যেশ্যে ১৮১৮ সালের মধ্যে ১০৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এছাড়া নারী-শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষার জন্য শ্রীরামপুরে প্রথম ডিগ্রি কলেজ (এশিয়ায় প্রথম) গড়ে তোলেন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, উনিশ শতকে শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত বইপত্রগুলি জ্ঞান ও শিক্ষার (গণশিক্ষার) প্রসারে গরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কর্ম-যজ্ঞে শ্রীরামপুর-ত্রয়ীর অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়।
উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে যে সমস্ত বাঙালি মনীষী গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজা রাধাকান্ত দেব তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য। বিভিন্ন বিষয়ে রাজা রামমোহনের রায়ের সঙ্গে তাঁর মত পার্থক্য থাকলেও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের বিষয়ে দু'জনে সহমত ছিলেন।
তাঁর উদ্যোগ ও সহযোগিতায় ১৮১৭ সালে কলকাতায় 'হিন্দু কলেজ' প্রতিষ্ঠিত হয়। 'স্কুল বুক সোসাইটি', 'ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি', 'হিন্দু মেট্রোপলিটন কলেজ' ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
নারী শিক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রাধান্য দেন এবং ১৮২২ সালে ‘স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন।
এছাড়া হিন্দু কলেজের ছাত্রদের শবব্যবচ্ছেদ এবং ইংরেজি সাহিত্য ও পাশ্চাত্য বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ বাংলা ভাষায় অনুবাদের জন্য উৎসাহিত করেন।
উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
মূলত তারই উদ্যোগে ১৮১৭ সালে 'ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি' গড়ে ওঠে, পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে সহায়তা করার জন্য বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা, প্রকাশ ও বিতরণের উদ্দেশ্যে তিনি এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
তাঁরই সক্রিয় উদ্যোগে ১৮১৭ সালে গড়ে ওঠে হিন্দু কলেজ, ১৮১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'পটলডাঙ্গা একাডেমি' যা বর্তমানে 'হেয়ার স্কুল' নামে পরিচিত। তাঁর উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয় সিমলা স্কুল ও আরপুলি স্কুল নামে আরও দুটি স্কুল।
নারীশিক্ষার প্রসারেও তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ নেন।
কলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য তিনি এদেশীয় ছাত্রদের বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করেন।
এইভাবে বাংলা তথা ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে তার সর্বস্ব ত্যাগ করে তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
১৬) তিন আইন কী?
ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল 'তিন আইন' পাস হওয়া।
১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ বিষয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এই আন্দোলনের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার উৎসাহিত হয় এবং ১৮৭২ সালে একটি আইন প্রণয়ন করে।
এই আইনের ফলে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ প্রথা নিষিদ্ধ এবং অসবর্ণ বিবাহ বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। বিবাহ সংক্রান্ত এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি এই আইন ইতিহাসে 'তিন আইন' নামে পরিচিত।
১৮৮০ সালে কেশবচন্দ্র সেন সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে 'নববিধান সমাজ' প্রতিষ্ঠা করেন।
কেশবচন্দ্র সেন ছিলেন রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজের একজন অগ্রগণ্য নেতা। বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে তিনি ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিস্কৃত হন এবং 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' নামে একটি পৃথক সংগঠন গড়ে তোলেন।
পরবর্তীতে এই সংগঠনের কিছু তরুণ সদস্যের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ দেখা দেয় এবং তিনি ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ-এর নিয়ম ভেঙে নিজের ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যাকে কোচবিহারের মহারাজের সঙ্গে বিবাহ দেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিবনাথ শাস্ত্রী-সহ কয়েকজন সদস্য তাঁর 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' ত্যাগ করলে তিনি সর্বধর্মসমন্বয়ের আদর্শে 'নববিধান' ঘোষণা করেন এবং 'নববিধান সমাজ' গঠন করেন।
অথবা, ব্রাহ্মসমাজের দুটো সমাজসংস্কারমূলক কাজের উদাহরণ দাও।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসাবের আগে বাংলার সমাজ জীবন ছিল নানা ধরণের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত।
রাজা রামমোহন রায়-সহ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী কিছু যুবক 'ব্রাহ্মসমাজ' প্রতিষ্ঠা করেন এবং সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এসমস্ত কুসংস্কার ও কুপথা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাদের এই আন্দোলন 'ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলন' নামে পরিচিত।
তাঁদের উদ্যোগে ---
১) সমাজ থেকে সতীদাহপ্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, দেবদাসীপ্রথা, জাতিভেদপ্রথা, অস্পৃশ্যতা, গঙ্গাজলে সন্তান বিসর্জন ইত্যাদি কুপ্রথা দূর হয়।
২) রাজা রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন, অক্ষয় কুমার দত্ত, শিবনাথ শাস্ত্রী, আনন্দমোহন বসু প্রমুখের প্রচেষ্টায় সর্বধর্মসমন্বয় সাধন ও মানবতাবাদ-এর প্রচার ও প্রসার ঘটে।
৩) ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ-এর নেতা কেশবচন্দ্র সেনের আন্দোলনের প্রভাবে ১৮৭২ সালের সরকার 'তিন আইন' পাস করে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করে এবং অসবর্ণ বিবাহকে স্বীকৃতি দেয়।
১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেন ও তাঁর অনুগামীরা ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিস্কৃত হলে তাঁরা গড়ে তোলেন 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ'।
কিন্তু কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে এই সংগঠনের তরুণ সদস্যদের মতবিরোধ শুরু হয়। ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ-এর নিয়ম ভেঙে কেশবচন্দ্র সেন নিজের ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যাকে কোচবিহারের মহারাজের সঙ্গে বিবাহ দিলে এই মতপার্থক্য চরম আকার নেয়।
মূলত, এই কারণকে সামনে রেখেই ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ এর কয়েকজন তরুণ এই সংগঠন ত্যাগ করেন এবং 'সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ' নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের আগে বাংলার সমাজ জীবন ছিল নানা ধরনের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত।
রাজা রামমোহন রায়-সহ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদি কিছু যুবক সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সমস্ত কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
মূলত, উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত 'ব্রাহ্মসমাজ' ও হিন্দু কলেজের তরুন অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর 'নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী' সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও গোঁড়ামি দূর করে একটি আধুনিক যুক্তিবাদী এবং মানবতাবাদের উপর ভিত্তি করে সমন্বয়বাদী সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে এই এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।
অথবা
কে, কাকে, কেন 'ঐতিহ্যবাহি আধুনিকতাবাদী' বলে অভিহিত করেছেন?
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের আগে বাংলার সমাজ জীবন ছিল নানা ধরনের কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত।
রাজা রামমোহন রায়-সহ পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদি কিছু যুবক সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সমস্ত কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
মূলত উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলায় রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত 'ব্রাহ্মসমাজ' সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও গোঁড়ামি দূর করে একটি আধুনিক যুক্তিবাদী এবং মানবতাবাদের উপর ভিত্তি করে সমন্বয়বাদী সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।
তাঁর এই উদ্যোগের জন্য রাজা রামমোহন রায়কে ঐতিহাসিক স্পিয়ার 'আধুনিক ভারতের স্রষ্টা' এবং ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে 'ঐতিহ্যবাহী আধুনিকতাবাদী' বলে অভিহিত করেছেন।
আঠারো শতকের শেষদিকেও বাংলার ধর্মীয় ও সমাজ জীবনে নানা কুসংস্কারের অস্তিত্ব ছিল। গঙ্গা সাগরে সন্তান বিসর্জন, সতীদাহ প্রথা, অস্পৃশ্যতা প্রভৃতি। এই অবস্থার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে রাজা রামমোহন রায়, কেশবচন্দ্র সেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ডিরোজিও, শ্রীরামকৃষ্ণ প্রমুখের নেতৃত্বে সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন।
এই আন্দোলনের ফলে, বেশকিছু সাফল্য অর্জিত হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল :
১) ১৮২৯ সালে ১৭ নং রেগুলেশন আইন পাস করে সতীদাহপ্রথা নিষিদ্ধ করা হয়।
২) কেশবচন্দ্র সেনের আন্দোলনের প্রভাবে ১৮৭২ সালে 'তিন আইন' পাস করে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হয় এবং অসবর্ণ বিবাহ স্বীকৃতি পায়।
৩) বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় ও সহযোগিতায় ১৮৫৬ সালে ‘বিধবাবিবাহ আইন’ আইন পাস করে বিধবাবিবাহকে আইনসিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
- উত্তর লেখার সময় যেকোন দুটি সাফল্যের কথা লিখতে হবে।
পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণার সংস্পর্শে এসে রাজা রামমোহন রায় হিন্দু ধর্মের প্রচলিত মূর্তি পূজা ও আচার অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেন এবং একেশ্বরবাদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে ওঠেন।
এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং ধর্ম ও সমাজ সংস্কার বিষয়ে ভাব বিনিময়ের উদ্দেশ্য নিয়ে ১৮১৫ সালে তিনি গড়ে তোলেন ‘আত্মীয় সভা’।
পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণার সংস্পর্শে এসে রাজা রামমোহন রায় হিন্দু ধর্মের প্রচলিত মূর্তি পূজা ও আচার অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেন এবং একেশ্বরবাদের প্রতি অনুরক্ত হয়ে ওঠেন।
১৮২৮ সালে তিনি হিন্দু সমাজ ও ধর্মের প্রচলিত কুসংস্কার, অনুষ্ঠান সর্বস্বতা, লোকাচার এবং পুরোহিত তন্ত্রের মূঢ় আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য এবং যথার্থ হিন্দু সমাজ ও ধর্মপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ‘ব্রাহ্ম সভা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এই সভায় বেদ, উপনিষদ পাঠ করার ব্যবস্থা হয়।
ডিরোজিও ছিলেন উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক। তৎকালীন রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস-সহ সমাজের একাধিক কোন প্রথার বিরুদ্ধে সংস্কার আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করে তিনি বাংলার সংস্কার আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
এই উদ্দেশ্যে তার নেতৃত্বে আর অনুগামীরা নব্য বঙ্গ গোষ্ঠী গড়ে তোলেন এবং নব্য বঙ্গ আন্দোলন শুরু করেন।
এই আন্দোলনের ফলে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদী ও সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে, যা তৎকালীন ধর্ম ও সমাজ ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
ডিরোজিও ছিলেন উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক। তৎকালীন রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস-সহ সমাজের একাধিক কু-প্রথার বিরুদ্ধে সংস্কার আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।
এই উদ্দেশ্যে তাঁর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা ‘নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী’ গড়ে তোলেন এবং ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন’ শুরু করেন। হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও নব্য বঙ্গ গোষ্ঠীর সদস্যরা 'ডিরোজিয়ান' নামে পরিচিত। তাদের এই আন্দোলনের ফলে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদী ও সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে, যা তৎকালীন ধর্ম ও সমাজ ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
হিন্দু কলেজের তরুন অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশের হিন্দু সমাজে গভীর আলোড়ন শুরু হয়। তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্ধবিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তিবাদী ও সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টি গড়ে ওঠে, যা তৎকালীন সমাজ ও ধর্ম ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলে।
তবে, এই আন্দোলনের কিছু সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল :
১) তাদের নেতিবাচক চিন্তা ধারার বাড়বাড়ন্ত,
২) দেশের দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের কল্যাণে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা,
৩) তাদের দুর্বল সামাজিক ভিত্তি,
৪) শুধুমাত্র শহুরে উচ্চশিক্ষিত কিছুদিনের মধ্যে এই আন্দোলন সীমাবদ্ধ থাকা,
৫) মুসলিমদের সামাজিক সংস্কার বিষয়ে উদাসীন থাকা এবং
৬) ডিরোজিওর মৃত্যু পর তার অনুগামীদের নিষ্ক্রিয়তা।
মূলত, এই সমস্ত সীমাবদ্ধতার কারণে ডিরোজিওর মৃত্যুর পরপরই এই আন্দোলন গতিহারায় এবং শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।
বিভিন্ন বছরের প্রশ্ন পেতে এখানে ক্লিক করো।
Good study
উত্তরমুছুন