আধুনিক বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার অগ্রগতিতে মহেন্দ্রলাল সরকারের ভূমিকা :
বাংলা তথা ভারতে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজা রামমোহন রায়। তাঁর মৃত্যুর পর মহেন্দ্রলাল সরকার একাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। একজন ডাক্তার ও বিদ্যার্থী হিসেবে তিনি বাঙালি জাতিকে অন্ধ বিশ্বাস-এর পরিবর্তে যুক্তিবাদের পথে চালিত করতে উদ্যোগী হন।
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার অগ্রগতিতে মহেন্দ্রলাল সরকারের ভূমিকা:
অথবা
ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স-এর ভূমিকা :
অথবা
‘ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা’র ভূমিকা :
(যেভাবে প্রশ্ন আসবে সেই অনুযায়ী উপরের হেডিং থেকে উপযুক্ত হেডিং (পয়েন্ট) নির্বাচন করে সেটাই শুধু লিখতে হবে)
এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা :
১৮৬১ সালে আই এম এস এবং ১৮৬৩ সালে তিনি এমডি ডিগ্রী লাভ করেন। অসাধারণ রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ের ক্ষমতা অচিরেই তাঁকে জনপ্রিয় করে তোলে।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা :
প্রথম দিকে তিনি অ্যালোপ্যাথি চর্চা করলেও পরবর্তীকালে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। রাজেন্দ্রলাল দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখের প্রেরণায় তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় মনোনিবেশ করেন। তিনি অচিরেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিশ্বের অন্যতম সেরা হোমিওপ্যাথি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
বৈজ্ঞানিক সংগঠক:
বৈজ্ঞানিক সংগঠক হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেছেন ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স’ (IACS) বা ‘ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ১৮৭৬ সালে তৈরি এই প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞান চর্চার জন্য স্বতন্ত্র বিভাগ চালু করেন। পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণা করাই ছিল এর উদ্দেশ্য।
গবেষণাপত্র প্রকাশ:
এই বিজ্ঞান সংস্থার গবেষণাপত্র প্রকাশের জন্য তিনি চালু করেন ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ফিজিকস’ নামে একটি পত্রিকা।
বিজ্ঞান গবেষণা ও আবিষ্কার :
মহেন্দ্রলাল সরকার প্রতিষ্ঠিত আই এ সি এস-এ যে সমস্ত গবেষক কাজ করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জগদীশচন্দ্র বসু, চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন, মেঘনাথ সাহা, কেএস কৃষ্ণান প্রমুখ। এই প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করেই বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন 'রমন ইফেক্ট' আবিষ্কার করে ১৯৩০ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বিজ্ঞানী মেঘনাথ সাহা এখানে একটি সক্রিয় গবেষণা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এতে এক্স রশ্মি, আলোকবিজ্ঞান, চুম্বকত্ব, রমন ক্রিয়া প্রভৃতি বিষয়ে নানা মৌলিক গবেষণার কাজ হয়।
নারী শিক্ষায় উৎসাহদান :
তিনি নারীদের মধ্যে যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হন। তাঁর প্রচেষ্টায় সরলা দেবী চৌধুরানী ছাত্রদের সঙ্গে একত্রে পাঠ গ্রহণের সুযোগ লাভ করেন। তাঁর পরামর্শে ব্রিটিশ সরকার বিবাহবিধি (তিন আইন) প্রণয়নে মেয়েদের বিবাহের বয়স কমপক্ষে ১৬ বছর করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মূল্যায়ন :
এভাবে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার ও তাঁর প্রতিষ্ঠান বাংলা তথা ভারতের প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি শুধু ভারতে নয়, সমগ্র বিশ্বে বিজ্ঞান গবেষণার এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
--------------------------
বিকল্প প্রশ্ন :
১) ভারতে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স’ (IACS) বা ‘ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা’র ভূমিকা কী ছিল? (প্রশ্নের মান - ৮)
২) বাংলা তথা ভারতে বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার স্মরণীয় কেন? (প্রশ্নের মান - ৮)
অন্যান্য প্রশ্ন :
এই প্রশ্নটির মান - ৪ (চার) হলে কীভাবে লিখতে হবে এখানে ক্লিক করে দেখো। এবং তুলনামূলক স্টাডি করো। তাহলেই তুমি প্রশ্ন অনুযায়ী উত্তর লেখার সমর্থ অর্জন করতে শিখে যাবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন